ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘সবচে আওলা’ ধ্বনিতে মুখরিত বন্দর নগরী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০১৭
‘সবচে আওলা’ ধ্বনিতে মুখরিত বন্দর নগরী ‘সবচে আওলা’ ধ্বনিতে মুখরিত বন্দর নগরী, ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: শনিবার (২ ডিসেম্বর) ভোর থেকে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার আশপাশে মানুষের স্রোত নামে। যেন সব পথ মিশে গেছে জামেয়া ঘিরে। কারণ সেখান থেকে বের হবে রাসুল (দ.) বংশধর হযরতুল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ’র (ম.জি.আ.) নেতৃত্বে ঐতিহাসিনক জশনে জুলস। এ জুলুসে অংশ নিতে প্রতিবারের মতো এবারও ছুটে এসেছে নবী প্রেমিক মানুষ। 

সকাল সাড়ে ৯টায় যখন আলমগীর খানকাহ্-এ-কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে আল্লামা তাহের শাহের নেতৃত্বে যখন জুলুস বের হয় তখন মুরাদপুর থেকে কাতালগঞ্জ, চকবাজার, চন্দনপুরা সিরাজুদৌলা রোড হয়ে আন্দরকিল্লা-মোমিন রোড-জামালখান পর্যন্ত যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়।

রাস্তার দু’পাশে রাসুলপ্রেমিক লাখো মানুষের ঢল নামে।

জুলুস দেখতে রাস্তায় নেমে আসেন বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষেরাও। কেবল আওলাদে রাসুল আল্লামা তাহের শাহকে একনজরে দেখতে।
বিশেষভাবে তৈরি গাড়িতে বসা হুজুর কেবলাকে সালাম-শ্রদ্ধা জানান তারা।

জুলুসে অংশগ্রহণকারীদের হাতে শোভা পায় হুজুর কালেমা, ঈদে মিলাদুন্নবীর স্লোগান লেখা প্লেকার্ড, ফেস্টুন ও সবুজ চাঁদ তারকাখচিত পতাকা। অনেক তরুণ জোটবদ্ধ হয়ে একই ধরনের পোশাক পরিধান করে। সম্মিলিক কণ্ঠে তারা নাতে রসুল গাইছেন।

দেশের বিভিন্ন জেলা উপ-জেলা এবং চট্টগ্রামের আঅশপাশের উপজেলা থেকে আসা খণ্ড খণ্ড মিছিল জুলুসে অংশ নেয়। এসময় হামদ, নাত, নারায়ে তাকবীর-আল্লাহু আকবর, নারায়ে রিসালাত-ইয়া রাসুলুল্লাহ্ (দ.) স্ল্লোগানে প্রকম্পিত হয় পুরো বন্দরনগরী। কারও মুখে সবচে আওলা ও আলা হামারা নবী, কারও মুখে আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ।  

জশনে জুলুসে মানুষের ঢল নামে

দেখা গেছে, আয়োজন প্রতিষ্ঠান আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র কর্মকর্তারা জুলুসের সামনে সারিবদ্ধ হয়ে সামনের দিকে হেঁটে যাচ্ছেন। তার পরেই পুলিশি নিরাপত্তায় রয়েছে হুজুর কেবলার গাড়ি। আনজুমান ট্রাস্টের বিশেষ বিরাপত্তা বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতায় সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

ওই গাড়িতে আল্লামা তাহের শাহ’র (মাজিআ) দুই সন্তান আল্লামা সৈয়্যদ মোহাম্মদ কাশেম শাহ এবং সৈয়্যদ মোহাম্মদ হামেদ শাহ। এছাড়া পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস আল্লামা ওবায়দুল হক নঈমি ওই গাড়িতে রয়েছেন।

অনেকেই ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন গাড়ি থেকে জুলুসে অংশগ্রহণকারীদের শরবত, জুস, কমলা, চকলেট, গাজর, ক্ষিরা, কলা, বন, পাউরুটি ইত্যাদি বিভিন্ন খাবার সরবরাহ করছেন। এছাড়া জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার আশপাশে অন্তত ১০০টি গরু জবাই করা হয়েছে জুলুসে আসা নবী প্রেমিকদের খাওয়ানোর জন্য।

বিবিরহাট, মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ, চকবাজার, চন্দনপুরা, সিরাজুদৌলা রোড হয়ে আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, জামালখান, গণি বেকারি প্রদক্ষিণ করে পুনরায় চকবাজার, কাতালগঞ্জ, মুরাদপুর হয়ে জায়েমা আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ, আলোচনা সভা ও যোহরের নামাজের পর মুনাজাত শেষে অনুষ্ঠানের সমা্প্তি ঘটবে।

জুলুস শেষে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলীয়া মাদ্রাসা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) মাহফিল। এতে সভাপতিত্ব করবেন হজরতুল আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মু.জি.আ.)। আল্লামা সৈয়দ মোহাম্মদ কাশেম শাহ্ প্রধান অতিথি এবং আল্লামা সৈয়্যদ মোহাম্মদ হামেদ শাহ্ প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১২০১ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৭

এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।