রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউর মেজবান হলে ‘চিটাগাং স্ট্র্যাটেজিক আরবান মাস্টারপ্ল্যান' শীর্ষক ওয়ার্কশপের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে ইঙ্গিত করে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘পাঁচলাইশের আবাসিক এলাকায় একটি পার্কের কাজ করতে চেয়েছি।
যেটি পাকিস্তান আমলে অধিগ্রহণ করা হয়। যা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্পত্তি।
যেটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে দেখভাল করতে দেওয়া হয়। এখন তারা দাবি করছে উত্তরাধিকার ও দখলসূত্রে ওনারা মালিক। দখল সূত্রে কি মালিক হতে পারে কেউ?’
‘সেখানে পার্ক করতে চেয়েছি, সেটিও করতে দিল না। সেটি কি হয়। চট্টগ্রামে পার্ক নেই। প্রথমে আমি যখন মন্ত্রী হলাম। তখন প্রধানমন্ত্রীকে বললাম ডিসি হিলকে পার্ক করতে চাই। তিনি বললেন, আর কোথাও জায়গা নেই। ডিসি হিল চট্টগ্রামের প্রাণকেন্দ্র। দেখুন কত মানুষ হাঁটছে। ’
গণপূর্তমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ আগ্রাবাদে একটি পার্ক করতেছি। সেখানে সিটি করপোরেশন আপত্তি দিলো। এভাবে কি হয়। গণপূর্তের সম্পত্তি কি কেউ নিতে পারবে। কোন দিন নিতে পারবে না। আপনাকে কে বলেছে চাঁদা দেওয়ার জন্য। আপনার কাছে কে চাঁদা চাইছে?
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে যানবাহন নিয়ে কথা হচ্ছে। সিডিএ চেয়ারম্যান হওয়ার পরে এখানে অনেক ফ্লাইওভার হয়েছে। ফ্লাইওভার ইজ ওয়ান অব দ্যা সলিউশন বাট নট অনলি সলিউশন। আমাদের রাস্তাগুলোতে সিসটিম্যাটিক ট্রান্সপোর্টেশন হয় না। আমরা দেখি বিদেশে গেলে বাস এক লাইনে চলতেছে। কিন্তু আমরা চট্টগ্রামে কি দেখছি, এক বাসের সাথে অন্য বাসের প্রতিযোগিতা। যেখানে ট্রাফিক পুলিশও থাকে। আইন না মেনে যেখানে সেখানে বাসগুলো দাঁড়িয়ে থাকে। বাস যদি বাসের লাইনে থাকে। অন্য গাড়িগুলো অন্য লাইনে চললে তাহলে তো এ সমস্যা হবে না। ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চলতে হবে। ’
‘ট্রাফিক সিস্টেম ও ম্যানেজমেন্ট যেখানে আছে। রাস্তায় কেন হকার থাকবে? কারা এটি পরিচালনা করছে? সিটি করপোরেশন কেন এ নিয়ে কাজ করছে না। যানবাহন সিস্টেম নিয়ে কাজ করতে হবে। রাস্তায় কোনোমতেই হকার থাকা যাবে না। তারা ইনকামের অন্য কোনো পন্থা খুঁজে নেবে।
সকালে ডিসি হিল যারা মর্নিংওয়াক করেন তাদের নিয়ে ডিসি হিল পরিষ্কার করলাম। আমাদের এলাকা আমাদের পরিষ্কার রাখতে হবে। ঢাকা তো অনেক চেষ্টা করতেছে। ঢাকায় অনেক আছে। রমনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ ঢাকার অনেক পার্ক গণপূর্তের অধীনে। ঢাকায় পার্কের জন্য মেয়র আনিসুল হক মাসে তিনবার দেখা করত। পরে ৬টি পার্কের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে শর্তসাপেক্ষে। তিন বছর পরপর রিনিউ করতে হবে। মানুষ দেখে চিনে, ঠেকে চিনে। ’
গণপূর্তমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে সিডিএ, সিটি করপোরেশন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আমরা সবাই মিলে যদি চেষ্টা করি, তাহলে চট্টগ্রামকে একটি সুন্দর বাসযোগ্য নগরী হিসেবে গড়ে তোলা যাবে। আজকে বর্জে্যর জন্য চট্টগ্রামে হাঁটা যায় না। নোংরা। রাস্তায় রাস্তায় ময়লা সব পড়ে আছে। আর বিদেশে এ ময়লাগুলো সম্পদ। শুধু সিটি করপোরেশনের গাড়ির জন্য বসে থাকলে হবে না। ঢাকার ন্যায় চট্টগ্রামে সিডিএ’র মাধ্যমে আমরা যে অনন্যা আবাসিক এলাকা করছি। সেখানে স্যুয়ারেজ সিস্টেম প্লান্ট এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট করা হবে। ময়লা নিতে সিটি করপোরেশনের গাড়ি কখন আসবে, সেটির জন্য বসে থাকলে তো হবে না। যেহেতু চট্টগ্রামে কোনো সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট নেই। ’
‘চট্টগ্রামকে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আওতায় আনতে পারলে ভালো হবে এবং দুর্ঘটনাও কমবে। যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করতে দেওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট এলাকায় গাড়ি পার্কিং করতে হবে। আইনে চালকদের শাস্তি আরও বাড়াতে হবে। ’
সমস্যা চিহ্নিত করে সমস্যা সমাধানে সবাইকে আন্তরিক হওয়ারও পরামর্শ দেন গণপূর্তমন্ত্রী।
ওয়ার্কশপে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
চট্টগ্রামে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, সিডিএর নগর পরিকল্পনাবিদ ও প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর মো. শাহীনুল ইসলাম খান, বিশ্ববাংকের পক্ষে প্রজেক্টের টিম লিডার সিজিওকি সাকাকি, কলিন ব্রাডার, ডেভিড ইংহাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৭
এসবি/টিসি