এদিকে মৌসুমী সংগ্রহকারী ও পাইকারি ক্রেতাদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে এবার চামড়া কিনতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন আড়তদারেরা। ট্যানারি মালিকরা বাড়তি দামে চামড়া কিনবেন কি না সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তা আছে আড়তদারদের মধ্যে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সভাপতি মো.সেকান্দর বাংলানিউজকে বলেন, গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মিলিয়ে এবার আমরা মাত্র আড়াই লাখের মতো চামড়া পেয়েছি। এটা একটা অবিশ্বাস্য ঘটনা।
‘লবণ কিনে রেখেছিলাম। কামলাদের (শ্রমিক) টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছে। এবার আমাদের বাড়তি দামে লবণ কিনতে হয়েছে। চামড়া কম হলে লোকসানে পড়ে যাব। ’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছর কোরবানির পর দুপুর থেকে মৌসুমী সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া নেন পাইকারি ক্রেতারা। বিকেল থেকে পাইকারি ক্রেতারা আড়তদারের কাছে কাঁচা চামড়া সরবরাহ করতে শুরু করেন। প্রতিবছর কোরবানির পরদিন সকালের মধ্যেই মোটামুটি আড়তে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ শেষ হয়। এরপর নগরীর আতুরার ডিপোতে আড়তে শুরু হয় লবণ দিয়ে কাঁচা চামড়া শুকানোর কাজ।
চলতি বছরও কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাত করার জন্য আতুরার ডিপোতে ৩০০টি আড়ত আগেভাগে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছিল। তবে এবার অধিকাংশ আড়তে চামড়া নিয়ে বড় ধরনের ব্যস্ততা নেই বলে জানিয়েছেন সেকান্দর।
ঢাকার বাইরে এবার প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দর নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা।
সেকান্দর জানিয়েছেন, বড় গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৩০ফুট পর্যন্ত হয়। ছোট গরুর চামড়া ২০ ফুট পর্যন্ত হয়। সরকারি দরে কিনতে হলে বড় গরুর চামড়া ১২০০-১৩০০ টাকা এবং ছোট গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৮০০-৯০০ টাকায় কিনতে হবে।
এবার আড়তদারদের কাঁচা চামড়া কিনতে হয়েছে বড় গরু ১২০০-১৩০০ টাকায়। মাঝারি গরু ১০০০-১১০০ টাকায়। ছোট গরুর চামড়া সর্বোচ্চ ৭০০-৯০০ টাকায়।
এই দামের সঙ্গে প্রক্রিয়াজাতখরচ যোগ হবে ৩৫০ টাকা। এতে সরকারি দামের চেয়ে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। ট্যানারি মালিকরা এই বাড়তি দাম দেবেন কি না সেটা নিয়ে সন্দিহান মো.সেকান্দর।
‘চামড়া কম আসায় কাড়াকাড়ি পড়ে গেছে। দামও বেড়ে গেছে। এই দামে ট্যানারি মালিকদের কাছে কিভাবে বিক্রি করব বুঝতে পারছি না। ’
জানতে চাইলে কাঁচা চামড়া আড়তদার সমিতির সহ-সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, চামড়া এসেছে দুই লাখের কিছু বেশি। লক্ষ্যমাত্রা ছিল পাঁচ লাখ। দাম বেশি পড়ছে।
তবে ২-৩ দিনের মধ্যে আরও কিছু চামড়া আসবে বলে ধারণা করছেন আবদুল কাদের।
এক সপ্তাহ ধরে চলবে লবণ দিয়ে শুকানোর কাজ। ১০-১৫ দিন পর ট্যানারি মালিকরা এসে চামড়া নিয়ে যাবে আড়তদারদের কাছ থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৭
আরডিজি/টিসি