মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) নগরীর বহদ্দারহাটের কামারগলিতে দা-বটিতে শান দেওয়ার ফাঁকে কথাগুলো বলছিলেন কামার রাখাল কর্মকার।
তিনি বলেন, কোরবানির জন্য তৈরি করা দা, ছুরি, বটি, ধামা বিক্রি এবং পুরনো দা, ছুরিতে শাণের আয় দিয়ে সারাবছর জীবিকা নির্বাহ করি।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে শুধু রাখাল নয়, দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন রাখালের মতো কামাররা।
মানভেদে নতুন দা ২৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, ছুরি ১২০ থেকে ২০০ টাকায়, বটি ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকায়, জবাই ছুরি ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায় এবং ধামা ৪০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বহদ্দারহাট মোড়ের কামারগলির লিটন কর্মকার বাংলানিউজকে জানান, কোরবানের ঈদকে সামনে রেখে গ্রাহকের অর্ডার সামাল দিতে ইতিমধ্যে আমরা দোকানে বাড়তি কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছি। প্রতি কেজি ৮৫ টাকা দরে ২ মণ কাঁচা লোহা কিনে এনেছি। শাণ দেওয়ার যন্ত্রে ব্যবহারের জন্য আনা হয়েছে বাড়তি কয়লা ও হাতল। কোরবানির আয়ে আমাদের সারাবছর চলতে হয় বিধায় গ্রাহকের চাপ সামাল দিতে সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ইতিমধ্যে আমাদের পরিচিত কিছু গ্রাহক দা, বটি, ছুরি বানানোর অর্ডার দিয়ে গেছে এবং শাণ দিতে অর্ডার পেয়েছি। পাশাপাশি নতুন বটি, ছুরি তৈরি করছি। বিশেষ করে কোরবানের ৪/৫ দিন আগে গ্রাহকের আনাগোনা বেড়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
সাইফুল নামে এক গ্রাহক জানান, বুধবার চাঁদ দেখা সাপেক্ষে কোন দিন কোরবান তা ঠিক হবে। ইতিমধ্যে বিবিরহাট গরুর বাজারে গিয়েছিলাম। এখনো গরু কেনা হয়নি। এ ফাঁকে কোরবানির জন্য বাসায় থাকা বড় দা, ছুরি ও বটিগুলো শাণ দিতে নিয়ে এলাম। দা শাণ করাতে ২০ টাকা, ছুরি ১৫ টাকা, বটি ৩০ টাকা করে নিচ্ছে কামাররা।
বহদ্দারহাটে কামার বাদল দত্ত জানান, পেশাটা টিকিয়ে রাখার জন্য সারাবছর লোকসান দিয়ে দিনাতিপাত করি। কোরবানি ঈদের অপেক্ষায় থাকি সারাবছর। এই কোরবানির আয় দিয়েই বছরজুড়ে আমাদের সংসার চলে। কাঁচা লোহা আগুনে পুড়িয়ে দা, ছুরি, বটি বানাতে হয়। এসময় আওয়াজ হয় বলে শহরে তেমন কেউ আমাদের দোকান ভাড়াও দিতে চায় না। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। যেমন পূঁজি নেই তেমনি আয়ও নেই। সীমিত আয় দিয়ে আমাদের সংসার। আগামীতে এ পেশা টিকিয়ে রাখা খুব কষ্ট হয়ে পড়বে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০১৭
এসবি/আইএসএ/টিসি