শনিবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত মতিবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘নতুন আয়কর আইন: জনপ্রত্যাশা’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর নীতি) পারভেজ ইকবালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহি পরিচালক বলেন, জনগণ যে কর দিচ্ছে সেটার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কিনা সেটাও এখন দেখতে চায়।
করের টাকার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতের বিষয়টি নতুন আইনে রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
বাজেটের আগে এনবিআর চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে সভা করে প্রস্তাবনা নিয়ে থাকেন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, অতীতে এসব প্রস্তাব বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। এই আলোচনা সভাও যদি নিয়ম রক্ষার হয় তবে কোন সুফল পাওয়া যাবে না।
চট্টগ্রাম মেট্রো পলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি মাহবুব চৌধুরী বলেন, আমাদের কোন কোন প্রস্তাব গ্রহণ হলো আর কোনগুলো হয়নি সেটা জানতে চাই। কারণ আগে আমরা এসব বিষয়ে অনেক প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু আমলে নেওয়া হয়নি।
কর আইনে অধিক স্লাবের সমালোচনা করে তিনটি স্লাবে নিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। একই কথা বলেছেন, নগর পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার।
কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মাহফুজুর হক মনি বলেন, আমাদেরকে বলা হয় রাজস্ব বোর্ডের অংশীজন। কিন্তু বাজেটে আমাদের প্রস্তাবনাগুলো রাখা হয়না। কি ধরনের অংশীজন আমরা তা বুঝি না।
কর্মকর্তা এবং করদাতাদের মধ্যে অবিশ্বাস কাজ করে উল্লেখ করে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, যারা কর দেন তারাই ভাল প্রচারক হতে পারতেন। ঝামেলামুক্তভাবে কর দিতে পারলে তারাই অন্যজনকে বলতেন কর দেওয়া ভাল। কর দিলে নানা ধরনের সুবিধা আছে। কিন্তু সেই পরিবেশ তো নেই। উল্টো মানুষের উপর নানা রকম অনাকঙ্খিত ঝামেলা এসে পড়ছে।
আদর্শ কর ব্যবস্থায় ট্যাক্স ডিপেনিং হয় না, কর জাল বিস্তৃত হয় মন্তব্য করে এনবিআর সদস্য (মূসক) ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা সেটা করব।
তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য যেভাবে পরিচালিত হয় সেটাকে আইন অনুসরণ করবে, ব্যবসা পদ্ধতি আইনকে অনুসরণ করবে না। নতুন আইনে আমরা কর কর্মকর্তাদের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা কমিয়ে আনব।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ১৯৮৪ সালের কর অধ্যাদেশ দিয়ে কর আদায় করতে হচ্ছে। পুরনো এ আইনের সঙ্গে বর্তমানে অনেক কিছুই যায়না। তাই যুগপোযোগী আইন প্রণয়ন জরুরি।
ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব আইন করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়া যাতে ব্যবসায়ীরা রাজস্ব দিতে পারে সে ধরনের আইন করতে হবে। কর দিতে গিয়ে ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
ব্যবসায়ীরা কর দিতে প্রস্তুত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে ৩ কোটি ব্যবসায়ী আছে। কিন্তু কর দিচ্ছে ১২ লাখ এটা কেন। অন্তত ১ কোটি মানুষকে করের আওতায় আনা গেলে আদায় অনেক বেড়ে যাবে।
করদাতা বাড়াতে জাতীয় চট্টগ্রাম চেম্বার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মিলে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২০২৯ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৭
এমইউ/টিসি