কিন্তু এত্তো রুটিন মেনে চলা এই মেয়েটির যে নাচের প্রতি অগাধ দরদ, তা বোঝা গেল পুরস্কারের ঝুলি দেখে। সেই ছোটবেলা থেকেই নাকি নাচের প্রতি এমন ভালোবাসা।
‘নাচ-ই আমার প্রাণ।
পুরো নাম এলিট দাশ গুপ্তা। তবে বন্ধু-বান্ধবদের কাছে অ্যানি নামেই পরিচিত। পড়ছেন চট্টগ্রামের তারুণ্যমুখর বিশ্ববিদ্যালয় ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির (ইডিইউর) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ।
শান্ত স্বভাবের মেয়ে এলিট পড়ালেখায় যেমন ভীষণ মেধাবী, তেমনি নাচেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন সবার। আইটিবিদ হওয়ার স্বপ্নে বিভোর মেয়েটি ইতোমধ্যে নিজের সৃষ্টিশীল কাজের জন্য সহপাঠীদের কাছে হয়ে উঠেছেন ক্যাম্পাস তারকা।
তবে কেবল ইডিইউতে নয়, চট্টগ্রামের বড় ধরনের সব অনুষ্ঠানের মঞ্চেও দেখা যায় প্রিয়মুখ এলিটকে। মেয়ের আগ্রহ দেখে সেই ক্লাস ফোরে পড়া অবস্থায় আর্য্য সঙ্গীত নামের একটি নাচের স্কুলে তাকে ভর্তি করিয়ে দেন মা বেবী বিশ্বাস।
এরপর পিংকি ম্যাডাম, তরুণ চক্রবর্তী স্যারের কাছে তালিম নিয়ে একে একে মুন্সিয়ানা দেখাতে শুরু করেন ফোক, ক্লাসিক্যাল, কত্থক, মণিপুরী নৃত্যে। বাবা নবজিৎ দাশ মেয়ের পুরস্কার পাওয়ার ঝুলি দেখে যেন হতবাক হতে শুরু করেন। তিনি আর্শীবাদ করেন মেয়ে সত্যিই একদিন দেশের সুনাম ছড়িয়ে দেবে নৃত্যে।
নজরুল স্মৃতি স্বর্ণপদক, জাতীয় শিশু কিশোর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, লোকশিল্পী শ্যামসুন্দর শেফালি স্বর্ণপদক, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পুরস্কার, চট্টগ্রাম লোকসঙ্গীত ও লোকনৃত্য, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পদক, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি প্রতিযোগিতা, বুলবুল নৃত্য উৎসব, বিজয় দিবস উদযাপন পরিষদ, কুন্ডেশ্বরী বালিকা বিদ্যামন্দির, নবীন মেলা সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, চট্টগ্রাম সৎসঙ্গ সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, বাবুই খেলাঘর আসর, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ইডিইউ আইডল সহ অন্তত ২০টি পুরস্কার লাভ করেছেন দুই বোনের মধ্যে বড় এলিট।
নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইডিইউকে ভীষণ ভালোবাসেন এলিট। বলেন, ‘আমার সহপাঠী থেকে শিক্ষকবৃন্দ পর্যন্ত সবাই আমাকে অনেক উৎসাহ দেন নাচে। স্বপ্ন দেখি একদিন নৃত্যে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিয়ে যাব। এজন্য সবার দোয়া চাই। ’
সহপাঠী শেষাদ্রী গুপ্তা এলিটের প্রিয় বন্ধুদের একজন। ক্যান্টিনে কফির কাপে চুমুক দিয়ে তিনি বলেন, ‘এলিট বন্ধু হিসেবে বিশ্বস্ত একজন মানুষ। যার ওপর নির্ভর করা যায়। ’
শিক্ষার্থীদের সাফল্যে বরাবরই গর্বিত ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান। তিনি বলেন, ‘সৃষ্টিশীল কাজ মানুষের নিজের সত্তাকে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্ন দেখায়। আর এমন কর্মই মূলত তাকে হাজার বছর বাঁচিয়ে রাখে। ’
সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহিত করতে ইডিইউর ক্লাবগুলো বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৭
আইএসএ/টিসি