ঢাকা, রবিবার, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কাপ্তাই ঘুরে রাঙামাটি যাচ্ছেন চট্টগ্রামের যাত্রীরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
কাপ্তাই ঘুরে রাঙামাটি যাচ্ছেন চট্টগ্রামের যাত্রীরা রাঙামাটির সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগের প্রধান সড়কটির ১০০ মিটার রাস্তা ধসে পড়ে

চট্টগ্রাম: সাম্প্রতিক ভারী বৃষ্টির সময় রাঙামাটির সঙ্গে চট্টগ্রামের যোগাযোগের প্রধান সড়কটির ১০০ মিটার রাস্তা ধসে ১৫০ মিটার গভীর খাদে পড়ে গেছে। এর ফলে যাত্রীদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অবশ্য সেনাবাহিনী ও সওজ কর্তৃপক্ষ জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ধসে যাওয়া অংশটুকু পুনর্নির্মাণে।

চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়ক দিয়ে রাঙামাটি থেকে অক্সিজেন আসা অয়ন মারমা বাংলানিউজকে জানান, রাঙামাটি শহর থেকে প্রথমে সিএনজি অটোরিকশায় শালবাগান এলাকায় আসি। এরপর দেপ্প্যছড়ি এলাকায় বিশাল রাস্তা যেখানে ধসে পড়েছে সেখানে ১০ মিনিটের মতো দুর্গম পথ হাঁটতে হয়েছে।

তারপর আবার সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে ঘাগড়া এসে বাস ধরে চট্টগ্রাম আসি। এ পথে আসাটা নারী-শিশুদের জন্য কঠিন।

এ কঠিন পথ বাদ দিয়ে অনেকটা সহজ পথে রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রাম শহরে পৌঁছেছেন আমিনুল হক। বহদ্দারহাট মোড়ে তিনি জানালেন, রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার থেকে লঞ্চে কাপ্তাই জেটিঘাট নামি। সেখান থেকে বাসে বহদ্দারহাট। বেশিরভাগ মানুষ ওই পথেই যাওয়া-আসা করছে।

তিনি জানান, রাঙামাটি থেকে দিনে তিনবার লঞ্চ যাওয়া-আসা করছে। ভাড়া লঞ্চের ছাদের চেয়ার ১০০ টাকা। লঞ্চের ভেতর ৮০ টাকা।

রাঙামাটির নানিয়ার চর, বিলাইছড়িসহ বিভিন্ন উপজেলায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী, সাতকানিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের বসবাস-ব্যবসা থাকায় ঈদের আগে বিপর্যয় ঘটায় পরিবার-পরিজনদের উদ্বেগ বেড়েছে। তাই অনেকে বেশি টাকা খরচ হলেও কাপ্তাই হ্রদ লঞ্চে পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রামে আসছেন।

রাঙামাটির তবলছড়ি বাজারে পাহাড়ধসের পর থেকে একপ্রকার আটকা পড়েছেন রাউজান নাতোয়ান বাগিচার ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. লোকমান। তিনি বাংলানিউজকে জানান, আমরা ১৩ জন ফার্নিচার তৈরি করে নিয়ে যাওয়ার জন্য এসেছিলাম। এরপরই ঘটল বিপর্যয়। গাড়ি চলে না। বাড়িও যেতে পারছি না। এখন শুনছি লঞ্চে কাপ্তাই যাওয়া যাচ্ছে। মালপত্র বাদ দিয়ে নিজেরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার চেষ্টায় আছি।

তিনি জানান, প্রথম দিকে জ্বালানি সংকটের কারণে সিএনজি অটোরিকশা বেশি ভাড়া হাঁকলেও এখন সহনীয় হয়ে গেছে। অনেকে সিএনজিতে শালবাগান হয়ে হেঁটে ঘাগড়া থেকে বাস ধরছে।

কাপ্তাই থেকে আসা প্রাবন্ধিক আমিনুর রশিদ কাদেরী বাংলানিউজকে জানান, চন্দ্রঘোনা-বড়ইছড়ি পর্যন্ত বাস যাচ্ছে। এরপর ছোট যানবাহনে কাপ্তাই যেতে হচ্ছে। রাস্তার পাশের ছোট-বড় প্রায় সব পাহাড়ের কিছু না কিছু অংশ ধসেছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, রাঙামাটির ভৌগোলিক ব্যাপার-স্যাপারই আলাদা। চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে যে অংশটুকু ধসে পড়েছে সেটি মেরামত করা সময়সাপেক্ষ ও সুপরিকল্পনার বিষয়। বর্ষার শুরুতে এমন বেহাল অবস্থা, পুরো বর্ষা মৌসুম সামনে রয়ে গেছে।

চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতা মনজুরুল আলম মনজু বাংলানিউজকে জানান, রাস্তার বড় একটি অংশ ধসে পড়ায় সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তবে চট্টগ্রাম থেকে কিছু বাস ঘাগড়া পর্যন্ত লোকালি যাচ্ছে। সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশায় চড়ে, পায়ে হেঁটে জরুরি প্রয়োজনে মানুষ রাঙামাটি যাচ্ছে।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম-রাঙামাটি রুটে ১৪০টি বাস থাকলেও এখন মাত্র ৬০-৭০টি চলাচল করছে। ঈদ মৌসুমে যাত্রী ও পর্যটক না থাকায় ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি      

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।