রোববার (১৮ জুন) বিকেলে নগরীর চেরাগির মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন ও নাগরিক সমাবেশ থেকে এই দাবি এসেছে।
পরিবেশবাদী সংগঠন পিপলস ভয়েসের সভাপতি শরীফ চৌহান বলেন, পাহাড়ে যারা অবৈধ বসতি স্থাপনে শক্তি যোগাচ্ছে সেই ক্ষমতাবানদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে পাহাড় ধংস, দখল ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবন ঝুঁকিতে ফেলার অভিযোগে মামলা করতে হবে।
‘মানবসৃষ্ট বিপর্যয় ও প্রকৃতির ক্ষতি থেকে অসহায় মানুষকে রক্ষা করতে না পারলে পুরো জনপদ হুমকির মুখে পড়বে।
তিনি বলেন, ২০০৭ সালে পাহাড় ধসের পর তদন্ত কমিটি যে ৩৬ দফা সুপারিশ করেছিল তার কোনোটিই বাস্তবায়ন হয়নি। রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসে মানবিক বিপর্যয়ের শিকার অসহায় মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে যা যা দরকার সব উদ্যোগ দ্রুত সরকারকে নিতে হবে। এছাড়া চট্টগ্রাম নগরী ও তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড় কাটা বন্ধে টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে।
রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও টেকনাফে পাহাড় ধসে নিহতদের স্মরণ, পাহাড় রক্ষা ও মানবিক বিপর্যয় ঠেকানোর দাবিতে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সমাবেশে শিক্ষক নেতা অশোক সাহা বলেন, অনেকে বলতে চান প্রাকৃতিক সকারণে পাহাড় ধস হয়েছে, তা সত্য নয়। এই বিপর্যয়ের কারণ মানুষের লোভ। বছরের পর বছর ধরে নির্বিচারে পাহাড় কাটার কারণেই এই ভয়াবহ বিপর্যয় হয়েছে। পাহাড় কাটা বন্ধ না হলে বারবার এই ঘটনা ঘটবে। এই অন্যায় অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মো. ইদ্রিস আলী বলেন, আমরা কথায় দাবি করি সভ্য হয়েছি, মানবিক হয়েছি। কিন্তু আমাদের আচরণ তা প্রমাণ করে না। ১০ বছর আগে এই চট্টগ্রাম শহরে পাহাড় ধসে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পরও পাহাড় কাটা থামেনি। প্রতিদিন নির্বিচারে পাহাড় কাটা চলছে। এর প্রতিবাদে যারা সরব তাদের কথা কেউ কানেই তুলছে না। ২০০৭ এর ঘটনার এক দশক পর পুরো চট্টগ্রাম জুড়ে পাহাড় ধসে ভয়াবহ এই বিপর্যয়কর ঘটনা ঘটলো। তবুও পাহাড় কাটা থামানোর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই।
শরীফ চৌহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ডা.এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী রূপক চৌধুরী, কলেজ শিক্ষক নেতা অধ্যাপক শিব প্রসাদ, রাজনীতিবিদ অমৃত বড়ুয়া, চিত্রশিল্পী দীপক দত্ত, সংস্কৃতিকর্মী সুনীল ধর, যুবনেতা নুর নবী আরিফ, ট্রেড ইউনিয়ন নেতা রবিউল ইসলাম রবি, খেলাঘর নেতা মোরশেদ আলম, উন্নয়ন কর্মী এস এম এরশাদুল করিম, সাংস্কৃতিক সংগঠক রুবেল দাশ প্রিন্স, পাঠাগার সংগঠক অমিতাভ সেন, ছাত্রনেতা প্রকাশ সিকদার প্রমুখ।
এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
আরডিজি/টিসি