রোববার (১৮ জুন) দুপুর দুইটার দিকে ছাত্রলীগের শ’খানেক নেতাকর্মী সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে, যারা স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল কাদেরের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া আব্দুল কাদের নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত সাবেক সন্ত্রাসী।
কাদেরের অনুসারীদের বিরুদ্ধে মামলা নেয়ায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম।
ডবলমুরিং থানা মামলা নেয়ায় কাউন্সিলর আব্দুল কাদের ক্ষুব্ধ হয়ে তার অনুসারীদের দিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
জানতে চাইলে নিজের ক্ষোভের কথা অস্বীকার করেননি কাউন্সিলর আব্দুল কাদের। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, মামলায় কমার্স কলেজের দুজন ছাত্রকে আসামি করা হয়েছে। সেজন্য ক্ষুব্ধ হয়ে কমার্স কলেজ ছাত্রলীগ সড়ক অবরোধ করেছিল।
ওসি মহিউদ্দিন সেলিম বাংলানিউজকে জানান, ১৪ জুন সন্ধ্যায় নগরীর মোগলটুলিতে স্থানীয় বাসিন্দা আলী মোহাম্মদ মেম্বারের (৬৫) বাড়িতে হামলা ও ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তদের হামলায় আলী মেম্বারসহ তিনজন গুরুতর আহত হন। দুর্বৃত্তরা আলী মেম্বারের ছেলে আলী হোসেন রনিকেও মারধর করে।
এই ঘটনায় সাবেক যুবলীগ নেতা ওবায়দুল করিম মিন্টুসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ৪০-৫০ জনকে আসামি করে ডবলমুরিং থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলা দায়েরের পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা চলছে। সর্বশেষ এর প্রতিবাদে কাদেরের অনুসারীরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেছে।
ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রলীগের ব্যানারে শ’খানেক ছেলে বাদামতল মোড়ে এসে সড়কের উপর দাঁড়িয়ে যানবাহন চলাচলে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। ৫-৭ মিনিটের মধ্যেই আমরা তাদের ধাওয়া দিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি।
পুলিশ সূত্রমতে, আব্দুল কাদের ও আলী মেম্বারের মধ্যে বিরোধ প্রায় আড়াই দশক আগের। ১৯৯১ সালে আগ্রাবাদে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত আব্দুল কাদেরকে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার করে পুলিশ। সেসময় আলী মেম্বার ছিলেন মোগলটুলি বাজার কমিটির সভাপতি। আব্দুল কাদের তাকে গ্রেফতার করানোর পেছনে আলী মেম্বারের হাত আছে বলে মনে করেন। তখন থেকেই আলী মেম্বারের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন কাদের।
জানতে চাইলে কাউন্সিলর আব্দুল কাদের বাংলানিউজকে বলেন, আগে বিরোধ থাকলেও গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আলী মেম্বার আমার পক্ষে কাজ করেছেন। কিন্তু তার দুই ছেলে এলাকায় মাদকের ব্যবসা করেন। আমি এটা বন্ধ করতে চেয়েছি। সেজন্য তিনি আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
আলী মেম্বারের বাসায় অনুসারীদের হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায়ী দুই ছেলের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী তাদের বাসায় হামলা করেছে। আমি চাঁদার টাকা খাই না, ইয়াবা-ফেনসিডিলের টাকা খাই না। জমি দখল করি না। আমার সঙ্গে কারও বিরোধ থাকার প্রশ্নই আসে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
আরডিজি/টিসি