ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নগরীর যে ৩০টি পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ !

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৫ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৭
নগরীর যে ৩০টি পাহাড় ঝুঁকিপূর্ণ ! একটি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরতদের সরিয়ে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: নগরীতে ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় চিহ্নিত করেছে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি। এই পাহাড়গুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটিতে অবৈধ বসতি গেড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছেন অনেকেই। বারবার তাদের উচ্ছেদ করা হলেও কয়েকদিনের মাথায় আবারও বসতি গাড়েন তারা। বর্ষাকে সামনে রেখে ঝুঁকিপূর্ণ সেসব পাহাড়ে বসবাসরতদের উচ্ছেদে আবারও মাঠে নামছে প্রশাসন।

যেই পাহাড়গুলো ঝুঁকিপূর্ণ: পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তালিকায় উঠে আসা ৩০টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় হলো, সিআরবি পাহাড়ের পাদদেশ, টাইগারপাস-লালখান বাজার রোড সংলগ্ন পাহাড়, টাইগারপাস মোড়ের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ, মোজাফ্‌ফর নগর পাহাড়, কাট্টলি থেকে সীতাকুণ্ড পর্যন্ত পাহাড়, সলিমপুর বাস্তুহারা পাহাড়, প্রবর্তক পাহাড়, গোলপাহাড়, ইস্পাহানী পাহাড়, বন গবেষণাগার ও বন গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন পাহাড়, জয়পাহাড়, চট্টেশ্বরী হিল, মতি ঝর্ণা ও বাটালি হিল সংলগ্ন পাহাড়, রেলওয়ে এমপ্লয়িজ গার্লস স্কুল সংলগ্ন পাহাড়, ফয়স লেক আবাসিক এলাকা পাহাড়, জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটি সংলগ্ন পাহাড়, গরীবুল্লাহ শাহ মাজারের পাশের বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি সংলগ্ন পাহাড়, ডিসি হিলের চেরাদী পাহাড়ের দিকের ফুলের দোকান সমূহের অংশ, পরিবেশ অধিদপ্তর সংলগ্ন সিটি করপোরেশনের পাহাড়, একে খান অ্যান্ড কোং এর পাহাড়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন পাহাড়, কৈবল্যধামস্থ বিশ্ব কলোনির পাহাড়, মিয়ার পাহাড়, লালখান বাজার চান্দমারি রোড সংলগ্ন জামেয়াতুল উলুম ইসলামি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের পাহাড়, ফরেস্ট রিচার্চ ইনস্টিটিউট একাডেমির উত্তর পাশের মীর মোহাম্মদ হাসানের মালিকানাধীন পাহাড়, ইস্পাহানি পাহাড় সংলগ্ন দক্ষিণ পাশের হারুন খানের মালিকানাধীন পাহাড়ের পশ্চিমাংশ, নাসিরাবাদ শিল্প এলাকা সংলগ্ন পাহাড়, লেক সিটি আবাসিক এলাকার পাহাড় ও সিডিএ অ্যাভিনিউ রোডের পাশে অবস্থিত ব্লোসম গার্ডেন সংলগ্ন  পাহাড়। পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস

বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ১১ জুন চট্টগ্রাম জেলায় পাহাড় ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়।

এর প্রেক্ষিতে পাহাড়গুলোকে একটি ব্যবস্থাপনার মধ্যে আনার জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২০০৮ সালের ২০ মে’র নির্দেশ অনুসারে বিভাগীয় কমিশনারকে আহ্বায়ক করে এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব) সদস্য সচিব করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি নগরীর এই ৩০টি পাহাড়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে।

ইতিমধ্যে এই কমিটির ১৬টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৮ মে) সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এই সভায় বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমীন বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরতদের উচ্ছেদে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু উচ্ছেদের কিছুদিনের মাথায় তারা পুনরায় সেখানে গিয়ে বসতি গাড়েন। বর্ষাকে সামনে রেখে পুনরায় সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোতে বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাসের অবৈধ সংযোগ থাকলে তা বিচ্ছিন্ন করা হবে। ’

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘পাহাড়ে উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করার কারণে প্রাণহানী অনেকাংশ কমে এসেছে। একেবারেই যাতে প্রাণহানী না হয় সেজন্য সেই ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোতে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি সেসব পাহাড়গুলোর মালিকানা যাদের হাতে সেই কর্তৃপক্ষকেও নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার জন্য বলা হবে। ’

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১১ জুন পাহাড় ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ২০০৮ সালে ১৪ জন, ২০১১ সালে ১৭ জন, ২০১২ সালে ২৮ জন, ২০১৩ সালে দুজন মারা যান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৬ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।