বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মীর মো.রহুল আমিন ফুয়েল চেকার ও সহকারী কেমিস্ট পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলা দুটির রায় ঘোষণা করেন।
দুটি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ইউসুফ আলী মৃধা, জ্যেষ্ঠ ওয়েলফেয়ার অফিসার (বরখাস্ত) গোলাম কিবরিয়া, অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী (বরখাস্ত) হাফিজুর রহমান।
রায় ঘোষণার সময় ‘ফুয়েল চেকার’ মামলার ৫ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফুয়েল চেকার’ মামলায় দণ্ডবিধির ১৬৭/১০৯ ধারায় রেলের তিন কর্মকর্তাকে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় বাকি দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
সহকারী কেমিস্ট পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলাও দণ্ডবিধির ১৬৭/১০৯ ধারায় রেলের তিন কর্মকর্তাকে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। একই রায়ে অভিযোগে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় নিয়োগপ্রত্যাশী বাকি তিনজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
রায়ের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের পিপি অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মাহমুদ বলেন, রায় আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল মধ্যরাতে তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সহকারী ওমর ফারুক তালুকদারকে বহনকারী গাড়িতে বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। তখন ওই গাড়িতে থাকা মৃধাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ওই ঘটনার পর ‘ফুয়েল চেকার’ নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে দুদক ২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করে। ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। মামলার এজাহারভুক্ত তিনজনসহ অভিযোগপত্রে মোট পাঁচজনকে আসামি করা হয়। ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর বিচার শুরু হয়।
সহকারী কেমিস্ট পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলাটি দায়ের হয়েছিল ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করে দুদক। এতে এজাহারের তিনজনসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। ২০১৪ সালের ১৭ জুন অভিযোগ গঠনের পর আসামিদের বিচার শুরু হয়। অভিযোগ গঠনের পর দুটি মামলার প্রত্যেকটিতে ১৮ জন করে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।
২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রেলওয়ের বিভিন্ন পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় মৃধার বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা করে দুদক। এরমধ্যে এই প্রথম একসঙ্গে দুটি মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকার একটি আদালতে ইতোমধ্যে মৃধার সাজা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৭
আরডিজি/আইএসএ/টিসি