ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কোমর সমান পানি, মাঝপথে বন্ধ গাড়ি

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
কোমর সমান পানি, মাঝপথে বন্ধ গাড়ি কোমর পানিতে জনদুর্ভোগ। ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষে অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে বহদ্দারহাট এলাকার বাসায় ফিরছিলেন মমিনুল হক ও তার স্ত্রী রাশেদা বেগম।  তাদের বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি হাঁটুপানি ডিঙ্গিয়ে বাসার খুব কাছাকাছি পৌঁছেও গিয়েছিল।  কিন্তু কাপাসগোলা এলাকায় যেতেই কোমর সমান পানির নিচে পড়ে গেল তাদের গাড়ি।  আর তাতেই বন্ধ গাড়ির ইঞ্জিন। 

আশপাশে একইভাবে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে থমকে আছে অন্য অটোরিকশাগুলোও।   রিকশা যা আসছে-তাও যাত্রীভর্তি।

  এরপর ভোগান্তিই সঙ্গী মমিনুল হক দম্পত্তি ও তাদের সন্তানের।  একদিকে বৃষ্টি অন্যদিকে পানির তোপ।
  গাড়ি থেকে নেমে বৃষ্টিতে ভিজে জবুথবু হয়ে অন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা। অবশ্য শেষ পর্যন্ত তারা কীভাবে বাসায় পৌঁছেছেন তা জানা যায়নি।

শুধু এই তিনজনের জীবনে বৃষ্টি আর জলজট চূড়ান্ত ভোগান্তি নিয়ে এসেছে তা নয়, শুক্রবার সকালে যারা অফিসমুখী হয়েছেন কিংবা বাসা থেকে বেরিয়েছেন তাদের জীবনেও এই ভোগান্তি এসেছে। জলাবদ্ধতার কারণে মাঝপথে থেমে আছে অ্যাম্বুলেন্সটি

শুক্রবার সকাল সাতটা থেকে নয়টা পর্যন্ত ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস।  আর তাতেই পুরো শহরের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে পানির নিচে।  

এসময় কর্ণফুলী নদীতে জোয়ার থাকায় বৃষ্টির পানি নামতে পারেনি। ফলে নগরীর ষোলশহর, মুরাদপুর, প্রবর্তক মোড়, কাপাসগোলা, চকবাজার, আগ্রাবাদ, হালিশহরসহ শহরের নিচু এলাকা ডুবে গেছে।

চকবাজারে কথা হয় মিমি সুপার মার্কেটের একটি দোকানের কর্মচারী জামাল উদ্দিনের সঙ্গে।  তিনি বলেন, ‘বাদুরতলা এলাকার বাসা থেকে কোমর সমান পানি মাড়িয়ে আসছি।  এখন শুনছি প্রবর্তক মোড়েও একই অবস্থা।   গাড়িতে বোধহয় আর ওঠা হবে না।   পুরো বর্ষা মনে হয় এভাবেই পার করে দিতে হবে। ’মাঝপথে বন্ধ গাড়ি

এদিকে কাপাসগোলা, প্রবর্তক মোড় এলাকায় বেশিরভাগ গাড়ির ইঞ্জিন বৃষ্টির পানির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে।  সেই গাড়ির তালিকায় আছে বাস থেকে শুরু করে প্রাইভেট কার, অটোরিকশা, টেম্পু, মোটরসাইকেল। তবে বেশিরভাগ গাড়িই বাড়ির পার্কিং আর গ্যারেজে বসে আছে।   যারা গাড়ি নিয়ে বের হয়েছেন তারাই বিপত্তিতে পড়েছেন।  

তাদেরই একজন অটোরিকশা চালক নুর উদ্দিন। তিনি গাড়ি নিয়ে আটকা পড়েছেন কাপাসগোলা এলাকায়। আক্ষেপের সুরে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘ভেবেছিলাম এতো পানি হবে না, তাই বের হয়েছিলাম গাড়ি নিয়ে।   আমরা দিনমজুর মানুষ।   কিন্তু এটা হলো কি? উল্টো ক্ষতিতেই পড়ে গেলাম।  ভাড়া তো পেলামই না।   এখন গাড়ি ঠিক করতে উল্টো পকেটের টাকা কাটা পড়বে। ’

নুর উদ্দিনের মতো একই আক্ষেপ-বাসচালক সাহাবুদ্দিন, টেম্পুচালক আসহাবেরও।   পানির কারণে তাদের গাড়ির  ইঞ্জিনও যে বন্ধ হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭

টিএইচ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।