ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম এবং সাংবাদিক আবুল মোমেনকে দেওয়া সংবর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, যাদেরকে সংবর্ধিত করার সুযোগ পেয়েছি তাঁরা প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
সবক্ষেত্রে অবদান থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম অবহেলিত উল্লেখ করে উপাচার্য অধ্যাপক মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, একটি কথা প্রচলিত আছে যে স্বীকৃতি পেতে হলে ঢাকা যেতে হয়।
একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড.আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন বলেন, একুশে পদক ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি নিবেদিত। এটি বাঙ্গালি জাতিসত্ত্বা, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির মূর্ত প্রতীক। তাই এই পদক পাওয়া পরম শ্রদ্ধার। এই পদক পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়।
তিনি বলেন, আমরা কোন কিছু প্রাপ্তির আশায় গবেষণা করিনা, করি আত্মার সন্তুষ্টির জন্য। তবে তাতে যদি কোন স্বীকৃতি এসে যায়, তা স্বভাবতই আনন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পদক নিয়ে আশাবাদী ছিলাম না, তবে পেয়ে আনন্দিত হয়েছি। না পেলেও আক্ষেপ ছিলো না।
তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পড়তে হবে, দেখতে হবে এবং শুনতে হবে, স্পষ্টভাবে যুক্তিসহকারে কথা বলতে হবে।
অনুষ্ঠানে শিল্পকলার ক্ষেত্রে একুশে পদ বিজয়ী ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম বলেন, সংগীত স্রষ্টা প্রদত্ত একটি প্রতিভা। শৈশব থেকেই সংগীতের প্রতি আমার টান ছিল, এখনো শুনি, অনুশীলন করি। সর্বোপরি একাগ্রতা আমাকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে। সাংস্কৃতিক কার্যক্রম তথা খেলাধুলা, সংগীত চর্চা তরুণদের খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখে।
সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনার দেশ। দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি তরুণ, যাদের বয়স ৪০ এর নিচে। তবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধসম্পন্ন আধুনিক সমাজ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে রয়েছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্র পাল্টাতে পারলেও, সমাজ এখনো পাল্টাতে পারিনি, মানুষগুলো এখনো পুরানো রয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধকে একটি ‘বিভাজন রেখা’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে ধরনের সামাজিক কাঠামো আমরা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে চেয়েছিলাম তা হয়তো হয়নি কিন্তু এই যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি সাহসী ও উদ্যোমী বাঙ্গালি পেয়েছি।
অনুষ্ঠানে ড. আলমগীর মোহাম্মদ সিরাজুদ্দীন, ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া, ওস্তাদ আজিজুল ইসলাম এবং সাংবাদিক আবুল মোমেন-এর পক্ষে পরিচিতি পাঠ করেন যথাক্রমে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হক, ছড়াকার উৎপল কান্তি বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. মমতাজ এবং সাংবাদিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী।
সিআইইউর ডেপুটি রেজিস্ট্রার নাহিদ খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সেকান্দার খান, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী এবং সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রকৌশলী এম আলী আশরাফ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য সাফিয়া গাজী রহমান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপিকা ড. আসমা সিরাজুদ্দীন, সাংবাদিক রইসুল হক বাহার, অধ্যাপক হাসিনা জাকারিয়া, ডা. আনজুমান আরা ইসলাম, সিটি প্ল্যানার প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া, সিআইইউর প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল হক খান, ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নুরুল আবসার নাহিদ, ব্যবসায় অনুষদের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম. আইয়ূব ইসলাম, ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক কাজী মোস্তাইন বিল্লাহ, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
শারিরীক অসুস্থতার জন্য অনুষ্ঠানে আসতে না পারায় ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়ার পক্ষে সম্মামনা স্মারক গ্রহণ করেন তাঁর কন্যা রঞ্জনা বড়ুয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০১৭
এমইউ/টিসি