ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি বিএনএস শেখ হাসিনা

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৮ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি বিএনএস শেখ হাসিনা সাবমেরিন ঘাঁটি বিএনএস শেখ হাসিনা। ছবি- পিআইডি

চট্টগ্রাম:  'বিএনএস শেখ হাসিনা' নামে নতুন একটি পূর্ণাঙ্গ নৌ-ঘাঁটি আত্মপ্রকাশ করলো রোববার ১২ মার্চ। চট্টগ্রাম নেভাল বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার দুপ‍ুরে এ ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় 'নবযাত্রা' ও 'জয়যাত্রা' নামে দুটি আধুনিক সাবমেরিনের কমিশনিং করেন প্রধানমন্ত্রী।  

বিএনএস শেখ হাসিনা কার্যত বাংলাদেশের প্রথম সাবমেরিন ঘাঁটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলো। আর দুই সাবমেরিনের কমিশনিং এর মাধ্যমে গু’টিকয় সাবমেরিন পরিচালনাকারী দেশের তালিকায় যোগ হলো বাংলাদেশের নাম।



নতুন ঘাঁটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং দুই সাবমেরিনের কমিশনিং করার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হতে চাই না। তবে কেউ আক্রমণ করলে যাতে সমুচিত জবাব দিতে পারি সেজন্য বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করছি।
এসব সরঞ্জাম আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের প্রতীক।
সাবমেরিন ঘাঁটি বিএনএস শেখ হাসিনা।  ছবি- পিআইডি
এ সময় নৌবাহিনী সদস্যদের আত্মবিশ্বাস আর আত্মমর্যাদা নিয়ে কাজ করার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।

ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীর রূপকার শেখ হাসিনা এ সময় নবযাত্রা সাবমেরিনের অধিনায়ক কমান্ডার কে এম মামুনুর রশিদ ও জয়যাত্রা সাবমেরিনের অধিনায়ক লে.কমান্ডার মাজহারুল ইসলামের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন। নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী সাবমেরিন দু’টির নামফলকও উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় ত্রিমাত্রিক সক্ষমতা অর্জনের পরিচিতি‍মূলক মহড়া দেয় বানৌজা বঙ্গবন্ধু, নেভাল এভিয়েশনের দু’টি হেলিকপ্টার, দু’টি এমপিএ ও একটি সুদক্ষ কমান্ডো দল।

নতুন সাবমেরিনের কমিশনিং ও ঘাঁটির আত্মপ্রকাশের মাধ্যমে সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ত্রিমাত্রিক শক্তিতে রূপ নেয় বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

এর ফলে বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়লো। পাশাপাশি তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকগুলোতে নিরাপত্তাসহ সার্বিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন ঘাঁটিতে থেকে সাবমেরিন দু’টির সহায়ক ভূমিকা পালনের সুযোগ তৈরি হলো।

সাবমেরিনের কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা এবং সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
সাবমেরিন ঘাঁটি বিএনএস শেখ হাসিনা।  ছবি- পিআইডি
নৌবাহিনীর জন্য এক হাজার ৫৬৯ কোটি টাকায় দুটি সাবমেরিন কেনার জন্য চীনের সঙ্গে ২০১৪ সালে চুক্তি করে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সাবমেরিন দুটি চীনের দালিয়ান প্রদেশের লিয়াওয়ান শিপইয়ার্ডে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।   সী ট্রায়ালের পর চীন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ও নাবিকদের তত্ত্বাবধানে ২২ ডিসেম্বর সাবমেরিন দুটি বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়।

সাবমেরিন দুটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৭৬ মিটার ও প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার।   টর্পেডো ও মাইনে সুসজ্জিত সাবমেরিনগুলো শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ ও ডুবো জাহাজে আক্রমণ চালাতে সক্ষম। পূর্ণ ধারণক্ষমতা নিয়ে এগুলোর গতিবেগ ঘণ্টায় ১৭ নটিক্যাল মাইল।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৭
আরডিজি/জেডএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।