ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টায় সাংসদপত্নী!

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০১৭
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টায় সাংসদপত্নী! মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ড আয়োজিত মানববন্ধন। ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দীন নদভীর স্ত্রী রিজিয়া রেজা চৌধুরীর বক্তব্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতারা।

বুধবার (০১ মার্চ) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চন্দনাইশ ও বাঁশখালী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট কমান্ড আয়োজিত মানববন্ধন চলাকালীন সমাবেশে তারা এ মন্তব্য করেন।

সাতকানিয়া উপজেলা কমান্ডের কমান্ডার আবু তাহের এলএমজি তার বক্তব্যে বলেন, সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধকালীন আলবদর কমান্ডার জামায়াতের সুরা সদস্য যুদ্ধাপরাধী মবিনুল হকের কন্যা, সাতকানিয়ার সাংসদ-পত্নী রিজিয়া রেজা চৌধুরী একুশে ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, তার বাবা যুদ্ধের সময় স্বাধীনতার পক্ষে পজেটিভ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন।

এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এ বক্তব্য মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চরম অবমাননাকর।
এটি সুকৌশলে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের চরম বিকৃতি ঘটানোর অপচেষ্টা। তাকে যুদ্ধাপরাধের মামলা ও শাস্তি থেকে বাঁচাতেই এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।

তিনি বলেন, মোমিনুল হক প্যারেড মাঠে নিজামীর জানাজায় জামায়াত-শিবিরকে একত্রিত করেছিলেন। তার নির্দেশে ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল আহম্মদ সৈয়দ ও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে কাঞ্চনার বুদ্ধিজীবী রায় বাহাদুর কামিনী ঘোষসহ ১৮ নিরীহ মানুষকে হত্যা করা হয়। এর মধ্যে আটজনকে কামিনী ঘোষের ভিটায় এবং ১০ জনকে নিজ নিজ বাড়িতে নিয়ে মাটি চাপা দেওয়া হয়। তিনি ছিলেন দক্ষিণ চট্টগ্রামে আলবদর, আল শামসের অপারেশন কমান্ডার। একাত্তরের ৩ ডিসেম্বর সাতকানিয়া উপজেলার বিএলএফ কমান্ডার মনির আহম্মদ রাজাকার শিরোমনি মোমিনুল হক চৌধুরীসহ ২৭ রাজাকারকে ছোট পুকুরিয়ায় বাঁশখালীর গ্রুপ কমান্ডার শফির কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার মো. সাহাবউদ্দিন বলেন, বাংলার মাটিতে রাজাকারের ঠাঁই হবে না। মানবতাবিরোধী আল শামস কমান্ডার মোমিনুল হক চৌধুরীর মেয়ে রিজিয়া রেজা চৌধুরী সাফাই গেয়ে বলেছেন, তার বাবা যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন। তিনি আসলে এসব মিথ্যাচার করে বাবার অপকর্ম ঢাকতে চেয়েছেন। আমরা মোমিনুল হক চৌধুরীর যুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপকর্মের বিচার এবং তাকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে এ ধরনের অপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্টদের হুঁশিয়ারি দেন।

মানববন্ধনে যুদ্ধকালীন ১ নম্বর সেক্টরের অধীন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিটগুলোর কমান্ডাররাসহ বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রিজিয়া রেজা চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসন থেকে যারা মনোনয়ন পাননি তারা বড় অঙ্কের টাকা খরচ করে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। যাতে বর্তমান সাংসদ নদভী মনোনয়ন না পান।

তিনি বলেন, আমার বাবার বয়স ৯০ বছর, তিনি খুবই অসুস্থ। এত বছর তারা কেন অভিযোগ করেননি।

প্যারেড মাঠে নিজামীর জানাজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৭

এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।