ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘একলাইন বাংলা লিখি, তবুও শুদ্ধভাবে লিখি’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৭
‘একলাইন বাংলা লিখি, তবুও শুদ্ধভাবে লিখি’ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। ছবি: সোহেল সরওয়ার-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সচেতনতা জরুরি উল্লেখ করে শিক্ষাবিদ, লেখক ও অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেছেন, ‘ভারতে গেলে আমরা দেখি সেখানে তারা প্রত্যেকটা দোকান-অফিস-আদালতে সাইনবোর্ডে হিন্দিতে লিখছে। তারা চেষ্টা করে তাদের মাতৃভাষায় সবকিছু বলতে ও লিখতে। সেখানে আমরা কতটুকু বলছি বা লিখছি।  বাংলা ভাষা ব্যবহারের দায়িত্ব কিন্তু আমাদেরই।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে ফেসবুক। সেখানে তারা বাংলিশ ভাষা ব্যবহার করে।

 এতে যে ভাষার কত ক্ষতিসাধন হচ্ছে তা তারা বুঝতে পারছে না। তাই ভাষা ব্যবহারে তাদের সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
  দরকার হলে একলাইন বাংলা লিখি, কিন্তু তা যেন শুদ্ধভাবে লেখা হয়। ’

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ‘পিপীলিকা বাংলা উৎসব-২০১৭’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, পিপীলিকা বাংলা উৎসব এর কাজ হল বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষার উপর দক্ষতা বাড়ানো। এরই অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে আসা। আমরা পুরো একটি দিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় কাটাই। এক ঘণ্টার একটি পরীক্ষায়ও নিই। পরীক্ষার প্রশ্নগুলো সম্পূর্ণ পাঠ্যবইয়ের বাইরে থেকে দেওয়া হয়। সবচেয়ে বড় কথা শিক্ষার্থীরা যাতে নিজের ভাষার ব্যাপারে দক্ষ হয় সেটিই আমাদের উদ্দেশ্য। নিজের ভাষা শুদ্ধভাবে যাতে লিখতে পারে সেজন্য আমাদের এই আয়োজন। ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যদি কোনো পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হয়, তাহলে মনে করতে হবে এর পেছনে পরীক্ষা কমিটির গাফিলাতি রয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয় প্রশ্ন ফাঁস হবে না, তাহলে কোনোভাবেই প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার কথা নয়। যদি প্রশ্ন ফাঁস হয়েও থাকে, তাহলে বুঝতে হবে আগে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ’

তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্রের যেকোনো একটি সেট ফাঁস হলো। কিন্তু সব সেট ফাঁস হওয়ার-তো প্রশ্নই উঠে না। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে মূল পরিকল্পনার ভেতরে সমস্যা আছে। যারা প্রশ্নপত্র তৈরির দায়িত্বে আছেন তাদের কোনো শাস্তি হচ্ছে না। তাদের যদি ১০ বছরের জেল হতো তাহলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হতো না। ’

বাংলা ভাষা ও বানান বিষয়ে যাবতীয় ভয় দূর করার উদ্দেশ্যে স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ‘বাংলা নিয়ে নানান খেলা সারাবেলা’ স্লোগানে অনুষ্ঠিত এ উৎসবের শিরোনাম রাখা হয় ‘শব্দ কল্প দ্রুম’।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

৭০টিরও বেশি স্কুল-কলেজের পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করে। তাদের কাছ থেকে এক ঘণ্টার একটি পরীক্ষাও নেওয়া হয়। পরীক্ষায় প্রথম ৫০ জনকে পুরস্কার দেওয়া হবে বলে আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৭

জেইউ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।