ঢাকা, শনিবার, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১, ২৭ জুলাই ২০২৪, ২০ মহররম ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ফিরে দেখা ২০১৬

আন্দোলনে ভাগ্যবদল ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর

সুবল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬
আন্দোলনে ভাগ্যবদল ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ত্রুটি ও সংশোধনের পর ১৪ হাজার শিক্ষার্থীর ভাগ্যবদল হয় বিদায়ী বছরে। ১১মে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পরদিন ত্রুটির অভিযোগ এনে হাজারো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক শিক্ষাবোর্ডের সামনে এসে বিক্ষোভ করতে থাকে।

তাদের দাবি, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণে এসএসসি’র গণিত বিষয়ের নৈব্যত্তিক প্রশ্নের উত্তরপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।  এতে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী আশানুরূপ ফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

 ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে বঞ্চিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ।

তারা উত্তরপত্র পূণর্মূল্যায়নের দাবিতে জোরদার করতে থাকেন আন্দোলন।

তাদের অভিযোগ, গণিতসহ এসএসসি পরীক্ষার কয়েকটি বিষয়ের ‘গ’ ও ‘ঘ’সেট প্রশ্নের উত্তরপত্র সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি।  চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের উদাসীনতা ও অবহেলার কারণে ফলাফল ত্রুটি হয়েছে।  এতে এসএসসি পরীক্ষার ফল বিপর্যয় হয়েছে। পরীক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ ও আশানুরূপ ফলাফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

পরে দাবির প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ ফলাফল পুনর্ম‍ূল্যায়নের আশ্বাস দিলে আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করা হয়।

পরে শিক্ষাবোর্ড কর্তৃপক্ষ প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল সংশোধনে করে পুনরায় ১৮মে ফলাফল প্রকাশ করতে বাধ্য হয়। সংশোধিত ফলাফলে গণিত বিষয়ে নতুন করে পাস করে ৩ জন এবং ১৪ হাজার ১৫৮ জন শিক্ষার্থীর গ্রেড পরিবর্তন হয়। এছাড়াও গণিত বিষয়ে ৮৩৬ জন শিক্ষার্থীসহ নতুন করে ১ হাজার ১১৫ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পাওয়ার গৌরব অর্জন করে।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এসএসসির ফলাফল প্রকাশেরপর কিছু শিক্ষার্থী উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানানোর প্রেক্ষিতে গণিত বিষয়ে নৈব্যত্তিক উত্তরপত্র  পুনর্মূল্যায়নের করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।  এতে ধরা পরে কারিগরি ত্রুটি।  গণিতে বহুনির্বাচনীর (এমসিকিউ) গ ও ঘ সেটের বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের ভিন্নতা ছিল। যা প্রধান পরীক্ষকসহ কারো নজরে আসেনি।  এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূলত  বাংলা ও ইংরেজি ২টি  ভার্সনে করা হয়।  এরমধ্যে গণিত বিষয়ে নৈর্ব্যত্তিক

প্রশ্নের উত্তরপত্রে সেটের গরমিল পরিলক্ষিত হয়।  নৈর্ব্যত্তিক প্রশ্নের উত্তরপত্র বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে  কম্পিউটারের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়।  পুনর্মূল্যায়নে ইংরেজি ভার্সন সেটে গরমিলের কারণে যোগফল

পরিবর্তন হয়। পরে সংশোধিত ফলাফল প্রকাশ করে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।  সংশোধিত ফলে ১৪ হাজারোধিক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব হাসান বলেন, প্রত্যেক বিষয়ের জন্য আলাদাভাবে প্রধান পরীক্ষক,  নিরীক্ষক ও পরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের চোখে বিষয়টি ধরা পরেনি।  প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র (নৈর্ব্যত্তিক) ছাপানোর দায়িত্ব বিজি প্রেসের।  ছাপানোর ক্ষেত্রে সেটের গরমিলের কারণে ফলাফল

পুনর্ম‍ূল্যায়ন করতে হয়েছে।  বিষয়টি আমরা বিজি প্রেস কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।  তারাই প্রয়োজনীয় 

ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

 

প্রশ্ন থেকে যায়, শিক্ষার্থীরা ফলাফল প্রকাশের পর যদি বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসূচি পালন না করতো, তাহলে আদৌ কি ফলাফল সংশোধন করা হতো? ১৪ হাজারোধিক এসএসসি পরীক্ষার্থীর ফল কি  পরিবর্তন হতো? তবে এর দায় কার?

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬

এসবি/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।