ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

শিশুপার্কের জায়গাতেই হবে স্মৃতিসৌধ: মেয়র

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬
শিশুপার্কের জায়গাতেই হবে স্মৃতিসৌধ: মেয়র ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ছবি: উজ্জ্বল ধর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নগরীর কাজীর দেউড়ির শিশুপার্কের চুক্তি ২০১৭ সালে শেষ হলে ওই জায়গায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

চট্টগ্রাম: নগরীর কাজীর দেউড়ির শিশুপার্কের চুক্তি ২০১৭ সালে শেষ হলে ওই জায়গায় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা’ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মেয়র একথা জানান।

এবার চসিক ১১ বীরঙ্গনাসহ ১৫০ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননাপত্র, স্মারক ও ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, চট্টগ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ করা উচিত।

আমাদের সবেধন নীলমণি একটি শহীদ মিনারই আছে। একুশে ফেব্রুয়ারিতে যাই। স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসেও যাই। প্রস্তাবিত স্মৃতিসৌধটি প্রাইম লোকেশনে করতে হবে। এক্ষেত্রে পুরোনো সার্কিট হাউসের সামনে যে শিশুপার্ক সেটিই যুক্তিযুক্ত। ওই জায়গাটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক জায়গা। শিশুপার্কের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ ২০১৭ সাল নাগাদ শেষ হবে। এরপর আর মেয়াদ বাড়ানো হবে না। এটিই স্মৃতিসৌধের জন্য প্রাইম লোকেশন। ওই জায়গাতেই আমি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য মনস্থির করেছি। এটি করবোই।

এর আগে নগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার এতগুলো বছর পরও চট্টগ্রামে একটি স্মৃতিসৌধ গড়ে উঠলো না এটি দুর্ভাগ্যের। আমি আশা করবো সিটি মেয়র এ সভাতেই স্মৃতিসৌধ নির্মাণের স্পষ্ট ঘোষণা দেবেন। শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে, ছবি: বাংলানিউজ

মেয়র বলেন, বিধিবদ্ধ আইন দ্বারা চসিক পরিচালিত হচ্ছে। খেতাবপ্রাপ্ত, শহীদ ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা পৌরকরমুক্ত। সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা নিজের বাসার ১ হাজার বর্গফুট পর্যন্ত করমুক্ত। হতদরিদ্র ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা করের আওতার বাইরে রেখেছি। নগরীর উন্নয়নের জন্য নাগরিকদের পৌরকর দিতে হবে এবং সক্ষম নাগরিকদের পৌরকর দেওয়ার দেশপ্রেম ও নৈতিকতার মধ্যে পড়ে।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যে চসিকের ৭১৬ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়েছে। ২১০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এ ছাড়া ৭০০ কোটি টাকার বেশি প্রকল্প তিন মাসের মধ্যে অনুমোদন পাবে আশাকরি।

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, বাংলাদেশের প্রথম বাজেট ৭৮৬ কোটি টাকা। এখন অনেক বাঙালি আছেন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। কিন্তু তারা কেউ যদি মৃত্যুর আগে সরকারকে হাজার কোটি টাকা দিয়ে যান তারপরও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাবেন না। মুক্তিযোদ্ধারা মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদা পাচ্ছেন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতাও বাড়াবে সরকার। এখন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান শুধু নয় পোষ্যরাও কোটাভুক্ত হয়েছেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের প্রতি যত্নশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র বলেন, আপনাদের ছেলে, নাতি কোন মতাদর্শে বিশ্বাসী, কাদের সঙ্গে মিশছে এসব বিষয়ে নজর রাখতে হবে। কোটার সুযোগে দেশের স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিশ্বাস করে না এমন অনেকে সরকারি চাকরিতে জায়গা করে নিচ্ছে। তারা ক্রমে উঁচু পদে চলে যাবে। এক্ষেত্রে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে। সন্তান ও পোষ্যরা যাতে বিপথগামী না হয় সে জন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দায়িত্ব নিতে হবে। অনৈতিক, অসুন্দর ও অসামাজিক কার্যক্রম থেকে পরিবারের সদস্যদের দূরে রাখতে হবে। সন্ত্রাস, মাদক ও জঙ্গিবাদ প্রজন্মকে দ্রুত গ্রাস করছে।

তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ির সয়েল টেস্ট, ড্রয়িং ও ডিজাইন চূড়ান্ত হয়েছে জানিয়ে বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে ভিত্তি স্থাপন করা হবে।

অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, রাশিয়ার কনসাল জেনারেল মি. ওলেগ পি বয়কো, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইসহাক মিয়া, সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও সাবিহা মুসা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার মো. সাহাব উদ্দিন, মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমদ, নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দীন আহমদ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত প্রমুখ।

স্বাগত বক্তব্য দেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী মো. আবুল হোসেন। বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী। সঞ্চালনায় ছিলেন মেয়রের একান্ত সচিব মোহাম্মদ মনজুরুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটি সমৃদ্ধ তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৬

এআর/আইএসএ/টিসি

**চসিকের উদ্যোগে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি তৈরি মাইলফলক

**১১ বীরঙ্গনাসহ ১৫০ মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা দিচ্ছে চসিক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।