ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সব শিক্ষক গুরু নয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬
সব শিক্ষক গুরু নয় বক্তব্য দেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

একসময় এখানে সাগর ছিল, পাহাড় ছিল কিন্তু শহর ছিল না। তখন মানুষ জানত না সাগরের ঢেউ সুন্দর ছিল। যখন মানুষ বুঝতে পারল সমুদ্রের ঢেউ সুন্দর তখনি এখানে লোকালয় সৃষ্টি হলো। ওই লোকালয়কে আলোকিত করতে একসময় মাদ্রাসা তৈরি করল কিছু মানুষ। সেই মাদ্রাসা ধীরে ধীরে স্কুলে পরিণত হলো। সেই থেকে কক্সবাজারবাসী মুক্তির স্বাদ পেল।

কক্সবাজার: একসময় এখানে সাগর ছিল, পাহাড় ছিল কিন্তু শহর ছিল না। তখন মানুষ জানত না সাগরের ঢেউ সুন্দর ছিল।

যখন মানুষ বুঝতে পারল সমুদ্রের ঢেউ সুন্দর তখনি এখানে লোকালয় সৃষ্টি হলো। ওই লোকালয়কে আলোকিত করতে একসময় মাদ্রাসা তৈরি করল কিছু মানুষ।
সেই মাদ্রাসা ধীরে ধীরে স্কুলে পরিণত হলো। সেই থেকে কক্সবাজারবাসী মুক্তির স্বাদ পেল।

কারণ একবার বিদ্যার জগতে পা রাখা মানে চিরকালের জন্য মুক্তি পেয়ে যাওয়া। এই স্কুল তা দিয়েছে। তাই এই স্কুলের প্রতি কক্সবাজারবাসী কৃতজ্ঞ। আমার মতো বহিরাগতরাও কৃতজ্ঞ। কারণ আলোকিত বাংলাদেশ গড়ছে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (কসউবি)। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে ভূমিকা রাখছে কসউবি। যা মঞ্চে বসা থাকা মানুষ ও মঞ্চের সামনে থাকা লোকজনের দিকে তাকালেই বোঝা যায় এই স্কুলের কৃতিত্ব, এই স্কুলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস।

এভাবেই কসউবিকে তুলে ধরে ১৪২ বছর উপলক্ষে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।

রোববার দুপুর ১২টায় কসউবি মাঠে আয়োজিত পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘একবার শিক্ষক হলে চিরদিনের শিক্ষক, একবার ছাত্র হলে চিরদিনের ছাত্র। ’

এরশাদ আমলে মার্শাল ল’য়ের সময়ের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি জানান, ধানমন্ডি থেকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র যাচ্ছিলেন। চারদিকে পুলিশের কড়া পাহারা। রাস্তায় গাড়ি চেক করছে পুলিশ।   কিন্তু তার ব্যবহৃত গাড়িটির ইনস্যুরেন্স ফেল করেছে এক সপ্তাহ আগে। ওই সময় ফার্মগেট দিয়ে পুলিশ থাকত না। তাই ওইপথেই যাচ্ছিলেন তিনি। তবে ফার্মগেট আসতেই লাল আলো জ্বলে উঠলো। তিনি গাড়ি থামালেন। রাস্তার ওপারে দা‍ঁড়ানো দৈত্য সাইজের ট্রাফিক সার্জেন্ট। তাকে দেখেই ভয়ে বুক কাঁপছিল। তিনি জানালা দিয়ে আকাশ ও প্রকৃতি দেখতে শুরু করলেন। সার্জেন্ট এসে পেছনে দাঁড়াল। সার্জেন্টের নিশ্বাসের  শব্দ শোনা যাচ্ছিল। সেই বিশাল সার্জেন্ট হিহি শব্দ করে বলল সালামালাইকুম স্যার। ঢাকা কলেজের শিক্ষক থাকা অবস্থায় সেই সার্জেন্ট ছাত্র ছিল।

তিনি বলেন, স্কুলে আসলে শুধু শিক্ষকদের কথা মনে পড়ে। শিক্ষকরাই ছাত্রদের জীবনের প্রথম নায়ক। সেই নায়কের সামনে এসে যখন একবার ছাত্রের মাথা নিচু হয়ে যায় আর সে মাথা উ‍ঁচু হয় না। রাস্তাঘাটেই দেখা যায় হাইকোর্টের বিচারক কিংবা কোনো মন্ত্রী তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে কদমবুসি করে।

প্রধান বক্তা আরও বলেন, সব শিক্ষকই শিক্ষক কিন্তু সব শিক্ষক গুরু নয়। গুরু হলেন সেই শিক্ষক যার কথা ছাত্র ভুলে না। শিক্ষক হলেন সেই শিক্ষক যার কথা ছাত্রের মনে থাকে না।

কসউবি ৯৮ ব্যাচের ছাত্র মুহিবুল মুক্তাদির তানিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব শফিউল আলম, ৭৮ ব্যাচের কসউবি’র প্রাক্তন ছাত্র ও ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার হেলাল উদ্দিন, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি প্রমুখ।

প্রাক্তন ছাত্র অধ্যাপক সোমেশ্বর চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে উপস্থিত আছেন, কসউবি’র ছাত্র ও শিক্ষক এম সিরাজুল হক, বর্তমান প্রধান শিক্ষক রাম মোহন সেন সহ পঞ্চাশ দশক থেকে ২০১৫ ব্যাচের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে দেশের শীর্ষ অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

** বয়সে নয় মানেও এগিয়ে নিতে হবে কসউবিকে

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৬

টিটি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।