ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘প্রটোকল লাগবে না, বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাও’

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৬
‘প্রটোকল লাগবে না, বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাও’

চট্টগ্রাম: প্রেসক্লাবে একটি অনুষ্ঠান শেষে চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের গাড়ি বহরটি ছুটছিল কাপাসগোলা অভিমুখে। জামালখান সেন্ট মেরিস স্কুল পেরিয়ে গণিবেকারি মোড়ে যাওয়ার আগেই গাড়ি থামাতে বললেন মেয়র।

দ্রুত নেমে গেলেন তিনি। ছুটে গেলেন মায়ের হাত ধরে রাস্তা পেরোবার সময় গাড়ির ধাক্কায় রক্তাক্ত শিশুটির কাছে।
কোলে তুলে নিলেন। পুলিশি প্রটোকলের গাড়িতে তুলে দিলেন মেয়র।

তারপর বললেন, ‘আজ আমার প্রটোকল লাগবে না, জলদি বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাও। তার চিকিৎসাটা জরুরি। ’

যেমন নির্দেশ তেমন অ্যাকশন। আহত শিশুটিকে নিয়ে প্রটোকলের গাড়িটি ছুটল চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। সেখানে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা শেষে আবার গাড়িতেই মা-মেয়েকে পৌঁছে দিল চন্দনপুরার বাসায়।

মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী রায়হান ইউসুফ বাংলানিউজকে এসব তথ্য জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই শিশুটির নাম নাইরা হান্নান তাহিয়া। সে পড়ে সেন্ট মেরিস স্কুলের দিবা শাখায় কেজি শ্রেণিতে। বাবা প্রবাসী। চন্দনপুরা থেকে মা নাজমা আক্তার রুমার হাত ধরেই প্রতিদিন স্কুলে আসে সে। সোমবারও যথারীতি স্কুলে আসার পথে গণিবেকারির পেট্রলপাম্পটির পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন রুমা। মেয়ের হাতটা ধরাই ছিল। কিন্তু দ্রুতগতির একটি গাড়ি ধাক্কা মারলে ছিটকে পড়ে তাহিয়া। তার হাঁটু ছিঁড়ে যায়। ভয়ে কাঁদতে থাকে সে। হতবিহ্বল মা দ্রুত ছুটে গিয়ে মেয়েকে বুকে তুলে নেবেন তারও উপায় ছিল না গাড়ির চাপের কারণে। ওই সময় মেয়র বিষয়টি আঁচ করতে পেরে দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে যান। ছুটে গিয়ে উদ্ধার করেন তাহিয়াকে। এখানেই শেষ নয়, মা-মেয়েকে প্রটোকলের গাড়িতে তুলে দিয়ে মেডিক্যালে পাঠিয়ে দেন।

নাজমা আক্তার রুমা বাংলানিউজকে বলেন, অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছি মেয়েটিকে প্রাতঃ বিভাগে নিয়ে আসার জন্যে। দুপুর বেলা গাড়ির চাপটা বেশি থাকে। রাস্তা পারপারে কষ্ট হয়। ভদ্রলোক যদি আমার মেয়েকে কোলে তুলে না নিতেন তবে আরেকটি গাড়ি এসে তাকে পিষ্ট করে ফেলতো। আল্লাহর রহমত ছিল বলতে হবে।

তিনি বলেন, জামালখানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ছোট ছোট বাচ্চারা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার করে। হাজার হাজার অভিভাবক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকেন। যদি একটি ফুটওভার ব্রিজ হতো তবে ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশে বাচ্চারা নিরাপদে স্কুলে আসা-যাওয়া করতে পারতো।   

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৬
এআর/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।