ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নামের ভুলে গ্রেফতার, অতঃপর ছাড়া

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৬
নামের ভুলে গ্রেফতার, অতঃপর ছাড়া ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‌্যাব) হাতে গ্রেফতার ‘ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি’ মোহাম্মদ আনোয়ারুল আশরাফ চৌধুরী ছাড়া পেয়েছেন। রোববার মধ্য রাতে ফটিকছড়ি থানায় হস্তান্তরের পর পুলিশ যাচাই-বাছাই করে দুপুরে তাকে ছেড়ে দিয়েছে।



মুক্তির পর মোহাম্মদ আনোয়ারুল আশরাফ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘নামের একাংশ মিল থাকায় ভুল বোঝাবুঝি থেকেই আমাকে ফটিকছড়ির বিমা কর্মকর্তা নূর খালেক মাস্টারের খুনি হিসেবে আটক করেছিল র‌্যাব। প্রকৃতপক্ষে ওই মামলার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
আমি এসএসসির প্রবেশপত্র, সনদ, এইচএসসির সনদ, পাসপোর্ট, বিয়ে রেজিস্ট্রির কপি, জায়গাজমির দলিল, ট্রেড লাইসেন্স, জন্ম নিবন্ধন সনদ দেখিছে প্রমাণ করেছি আমি সেই আলোচিত হত্যাকাণ্ডের খুনি নই। ’

তিনি বলেন, ‘ওই মামলাটির বেকসুর খালাস পাওয়া আসামি গোলাম মোস্তফা কালু এবং হত্যাকাণ্ডের সময়কার গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল আলম বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন আমি এ মামলা বা ঘটনার সঙ্গে কখনোই জড়িত ছিলাম না। হত্যাকারীর সঙ্গে নামের একটি অংশের মিল থাকায় আমাকে আটক করা হয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত, মা-বাবা ও স্বজনদের দোয়ায় আমি হয়রানি থেকে রক্ষা পেয়েছি এতে অত্যন্ত আনন্দিত। ’

টেলিফোনে যোগাযোগ করলে তৌহিদুল আলম বাবু বাংলানিউজকে জানান, মোহাম্মদ আনোয়ারুল আশরাফ চৌধুরী আইনগতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে হত্যা মামলার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল না এবং ফাঁসির দণ্ড পাওয়া আসামি তিনি নন। আমরা এ ব্যাপারে একমত হয়েছিলাম, বাদীপক্ষের দু-একজনও। কারণ যে মারা গেছে, যে মেরেছে দুজনই আমার অধীনে চাকরি করতো। আমি তাদের ভালো করেই জানতাম, চিনতাম। খুন হওয়ার ২-৩ মাস পর একবার আমি আগোরায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করতে দেখেছিলাম খুনিকে। তখন নীলক্ষেত থানা পুলিশকে বলে গ্রেফতারও করিয়েছিলাম। ৫ বছর আগে আমি ওই বিমা প্রতিষ্ঠান থেকে পদত্যাগ করি।

থানা সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ আনোয়ার আশরাফ চৌধুরীর বাবা ফটিকছড়ির আজিমপুরের মরহুম আবুল কাশেম চৌধুরী, তিনি দুবাইতে ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারের ব্যবসা করেন। অন্যদিকে খুনি আশরাফ হোসেন বাবু ফটিকছড়ির পশ্চিম হাইদচকিয়ার আবুল হোসেন মিস্ত্রির বাড়ির আহমদ হোসেন সরকার।     

এ ব্যাপারে জানার জন্য র‌্যাব-৭ এর ‌উপ-পরিচালক শাফায়েত জামিল ফাহিম এবং ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তারা ফোন রিসিভ করেননি।     

সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল ফটিকছড়ির কারবালা টিলায় গোল্ডেন লাইফ ইন্সুরেন্সের ফটিকছড়ি ব্রাঞ্চের সিনিয়র অফিসার নূর খালেক মাস্টারকে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। খুনের পর পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে, দুর্নীতির দায়ে আশরাফ হোসেন ও গোলাম মোস্তফা কালু নামের দুই কর্মকর্তাকে বরখাস্তের জের ধরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একই বছরের ২ আগস্ট নিহতের বাবা মো. দানেশ মিয়া বাদি হয়ে ফটিকছড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ২ অক্টোবর এ ঘটনায় চার্জশিট দেওয়া হয়। চার্জ গঠন হয় ২০০৯ সালের ১৬ জুন। ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৪ সালের ১৯ আগস্ট  দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৭৯ ধারায় বিভাগীয় জননিরাপত্তা ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মমিন উল্লাহ আশরাফ হোসেনকে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। এ মামলার অপর আসামি গোলাম মোস্তফা কালুকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।   

** বিমানবন্দরে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০১৫
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।