ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘ভূমিকম্প হলে ফাটলগুলো চোখে ভাসে ’

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৪, ২০১৬
‘ভূমিকম্প হলে ফাটলগুলো চোখে ভাসে ’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ভূমিকম্পের প্রচণ্ড ঝাঁকুনি আবারও মনে করিয়ে দিল ২০১১ সালের কথা। ওই বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে সারাদেশের মতো কেঁপে উঠেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোও।

ওই ভূমিকম্পে চবি আলাওল হলের সামনের অংশের ৪৮টি পিলার ও বিভিন্ন দেয়ালে বড় ধরনের ফাটল সৃষ্টি হয়েছিল।

সোমবার (৪ জানুয়ারি) ভোররাতে সারাদেশে আবারও অনুভূত হয় ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প।
এ ভূমিকম্পের আতঙ্ক ছিল ২০১১ সালের ভূমিকম্পের তুলনায় আরও বেশি। তাইতো ভূমিকম্পের পর আতঙ্কিত শিক্ষার্থীরা আলাওল হলের পিলারের ফাটলগুলো দেখিয়ে ফিরে যান ৫ ফেব্রুয়ারির সেই দিনটিতে।

যদিও সোমবার (৪ জানুয়ারি) ভোররাতে হওয়া ভূমিকম্পে হলটির কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে ২০১১ সালের ভূমিকম্পের সময় সৃষ্টি হওয়া ফাটলগুলোর পরিধি সামান্য বেড়েছে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সশব্দে ভূমিকম্প অনুভূত হলে আলাওল হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা হই-হুল্লোড় করে কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন।   অনেকেই আতঙ্কে হলের নিচেও নেমে আসেন।

ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শাহাদাত হোসেন বাংলানিউজিকে বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় পুরো হল প্রচণ্ড ঝাঁকুনি দিয়ে মড়মড়িয়ে ওঠে। আমরা আতঙ্কে দ্রুত কক্ষ থেকে বের হয়ে যাই। হলের সামনের ফাটলগুলো দেখলে ভয় পাই। কখন আবার ভেঙ্গে পড়ে। ভূমিকম্প হলে ফাটলগুলো চোখে ভাসে। ’

একই হলের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর ইন্টারনেটে তার মাত্রা দেখে ভয় পেয়ে গেছি। ২০১১ সালে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে হলের ৪৮টি পিলার ও বেশ কয়েকটি দেয়ালে ফাটল সৃষ্টি হয়েছিল। এবার তার চেয়েও বেশি ক্ষতি হতে পারতো। ভাগ্য ভালো সৃষ্টিকর্তা আমাদের বাঁচিয়েছেন’।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, ১৯৬৮ সালে সম্পূর্ণ ইটের গাঁথুনি দিয়ে ভিন্নরকম স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত হয় আলাওল হল। হলটি দেখতে দৃষ্টিনন্দন হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে পুরানো আবাসিক হল এটি। ২০১১ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি হওয়া ভূমিকম্পে হলে ফাটল দেখা দেওয়ার পরদিন হল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে হলটি সংস্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রকৌশল বিভাগ ও রেজিস্টার বরাবর লিখিত আবেদন জানানো হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকা থেকে প্রকৌশলী এনে ভবনের স্থায়ীত্ব পরীক্ষা করানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করলেও গতবছর হলটির বিভিন্ন কক্ষে ধসে পড়া পলেস্তারা সংস্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে হলের সামনের অংশের পিলারের ফাটলগুলো এখনও রয়ে গেছে। বর্তমানে এই হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন।

ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণা করেছেন এমন একজন চবি শিক্ষক বাংলানিউজকে জানান, পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় বড় ধরনের ফাটল থাকা সত্ত্বেও বারবার অক্ষত থাকছে হলটি। হলটি বেশ পুরনো। তাই এটি আর কতদিন অক্ষত থাকে তা বলা যাচ্ছে না। সম্ভাব্য যেকোনো ধরনের দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য শক্তিশালী একটি প্রকৌশল দলকে দিয়ে হলটি পরীক্ষা করা খুব জরুরি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৬
টিএইচ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।