ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পেটে অনেক ক্ষুধা, আর পারছিনা, গাড়ি চালাতে দিন’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৫
পেটে অনেক ক্ষুধা, আর পারছিনা, গাড়ি চালাতে দিন’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ‘নষ্ট’ রাজনীতির আগুন, ককটেল-পেট্রলবোমার কাছে অসহায় পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ির হর্ন বাজিয়ে সহিংসতা বন্ধের করুণ আবেদন জানিয়েছেন। বাধ্য হয়ে রাজপথে নেমে তাদের কন্ঠে উঠে আসে অসহায়ত্বের করুণ সুর, ‘পেটে অনেক ক্ষুধা, আর পারছিনা, এবার আমাদের গাড়ি চালাতে দিন।



বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় নগরীর ‍অর্ধশত পয়েন্টে হঠাৎ থেমে যায় হাজার হাজার পরিবহন। অটোরিক্সা, টেম্পু, সিটিবাস, মিনিবাসসহ বিভিন্ন গণপরিবহনের সঙ্গে প্রতিবাদে শামিল হল প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত যানবাহনও।


পরিবহন শ্রমিক নেতারা হাত তুলে সংকেত দেয়ার পর সম্মিলিতভাবে বেজে উঠে হাজার হাজার গাড়ির হর্ন। সহিংসতা বন্ধের শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর হয়ে উঠে টার্মিনাল, স্টপেজ, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকা।

বৃহত্তর চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এ প্রতিবাদ কর্মসূচীর ডাক দেয়। সংগঠনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরীর নেতৃত্বে নগরীর জামালখানে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে পালিত হয় মূল কর্মসূচী।

প্রায় ‍অর্ধশত সিএনজি অটোরিক্সার বহর নিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে আসেন মৃণাল চৌধুরীসহ পরিবহন শ্রমিক নেতারা। দুপুর ১টায় নেতারা রাজপথে নেমে এলে জামালখান সড়কে জমে যায় শত, শত গাড়ি।

হর্ণের বিকট আওয়াজের মধ্যে শ্লোগান উঠে, গাড়ি পোড়ানো, গাড়ি জ্বালানো/বন্ধ কর, করতে হবে, দুনিয়ার মজদুর/এক হও লড়াই কর।

এসময় প্রেসক্লাবের আশপাশের সড়কে, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শত, শত সাধারণ মানুষও এ প্রতিবাদে শামিল হন।

মৃণাল চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, গাড়ির হর্ন বাজালাম। গাড়ির হর্ন মানে আমাদের প্রতিবাদের সম্মিলিত আওয়াজ। আমরা দেখতে চাই, আমাদের প্রতিবাদের আওয়াজ বেশি নাকি ককটেল-পেট্রলবোমার আওয়াজ বেশি।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদদের কাছে আমাদের করুণ মিনতি, আপনারা সর্বনাশা রাজনীতি বন্ধ করুন। আমাদের পেটে অনেক ক্ষুধা, আমরা গাড়ি চালাতে চাই। আমরা আর পারছিনা, আমাদের গাড়ি চালাতে দিন।

কর্মসূচীতে অংশ নেয়া সিএনজি অটোরিক্সা চালক মো.আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের পেট আছে, স্ত্রী, বাচ্চা আছে। আমাদের বাঁচতে হলে ভাত খেতে হবে। সেজন্য আমরা রাস্তায় নামি। আমরা মারামারি করিনা, রাজনীতিবিদদের উপর হামলা করিনা। তারা কেন আমাদের পুড়িয়ে মারে ? আমরা শান্তি চাই। রাস্তায় বের হয়ে মরতে চাইনা।

অটোরিক্সা চালক সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, গাড়ি চালাতে এখন অনেক ভয় লাগে। তারপরও কি করব, গরীব মানুষ, রাস্তায় নামতে হয়। দুইজনে (শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া) মিইল্যা যদি একটা সমাধান করতে পারে আমাদের খুব উপকার হয়।

বাসচালক মাহবুব বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষমতায় কিভাবে যাবে আর ক্ষমতায় কিভাবে থাকবে, সেটাই একমাত্র চিন্তা। দেশটা ছারখার হয়ে যাচ্ছে সেটা কেউ ভাবছেন না। আমরা সমাধান চাই। যারা আমাদের গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে, তাদের যে কোনভাবে অবিলম্বে দমন করা হোক।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।