ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামের বুকে এক টুকরো রাশিয়া

বিনোদন করেসপনডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৪
চট্টগ্রামের বুকে এক টুকরো রাশিয়া ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: নাটকীয় ভঙ্গিতে জোরালো গলায় দ্বৈত সঙ্গীত। কখনো সুর চড়া,কখনো একদম চাপা।

গানের তালে বুটের ঠোকাঠুকিতে দলীয় নৃত্য। সাথে চলছে অপূর্ব ভঙ্গিতে অভিনয়।


কিন্তু গানের ভাষা এক লাইনও বাংলায় নয়। এই মুগ্ধতা,এই উল্লাস শুধুই সুরের ভাষার,ছন্দের আবিষ্টতায়। নৃত্যে-তালে-সুরে দু’ঘন্টার অনুষ্ঠান পরিণত হয় প্রাণবন্ত মিলনমেলায়।

এমনই অসাধারণ পরিবেশনা উপহার দিয়েছে রাশিয়ার দল ওরেনবার্গ স্টেট অ্যাকাডেমিক ফোক কয়্যার। ৪৭জন রাশিয়ান শিল্পীর এই দলে রয়েছে সঙ্গীতশিল্পী,নৃত্যশিল্পী,যন্ত্রশিল্পী,কোরিওগ্রাফার ও শিল্প সমালোচক।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে পালিত হয়েছে রাশিয়ান সাংস্কৃতিক উৎসব।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব ড.রণজিৎ কুমার বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার এ নিকোলায়েভ ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মো.মেজবাহ উদ্দিন।

আবৃত্তিশিল্পী ফারুক তাহের ও ফাল্গুনী বড়ুয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষণ বিভাগের পরিচালক মো.শাওকাত ফারুক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড.রণজিৎ কুমার বিশ্বাস বলেন,আমরা এই চুক্তির মাধ্যমে রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বাতায়ন খুলে দিতে চেয়েছি। ঢাকার পর কোথায় অনুষ্ঠান করবে এই সিদ্ধান্তহীনতায় আমি বীর চট্টলার নাম জোরালোভাবে উপস্থাপন করি।

ভাঙা ভাঙা বাংলায় উপস্থিত দর্শককে সালাম জানিয়ে বক্তব্য শুরু করে বিশেষ অতিথি রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার এ নিকোলায়েভ বলেন,রাশিয়া বাংলাদেশের কাছে ফিরে আসছে। পারমানবিক চুক্তি থেকে শুরু করে ৩ দশক ধরে আমাদের সাংস্কৃতিক বিনিময় দুই দেশের বন্ধন আরও সুদৃঢ় করেছে।

তিনি বলেন,বাংলাদেশের জন্য রাশিয়ার দ্বার সবসময় খোলা আছে। আজকের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা বাংলাদেশের মানুষকে আমাদের জীবনধারার সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে।

বক্তব্য শেষে আবারও বাংলায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

অনুষ্ঠান শেষে গাঢ় নীল ও গোলাপি পোশাক পড়ে নৃত্যশিল্পীদের অসাধারণ গান-নাচ-যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশন করে রাশিয়ার দল ওরেনবার্গ স্টেট অ্যাকাডেমিক ফোক কয়্যার। রুমালের ঝটকায় অথবা হাস্যজ্জ্বল মুখের হাসিতে মুগ্ধ দর্শক সারিতে বসা রাশিয়ানদের মুখে ছিল ‘ব্রাভো,ব্রাভো’ আর স্বদেশীদের মুখে বাহ,বাহ ! প্রত্যেক নাচ শেষে বিনম্র অভিবাদন পুরো পরিবেশনাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়।

১৯৭২ সাল থেকে রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক চুক্তি রয়েছে। এ চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে গত বছরের ১৫ জানুয়ারী একটি যৌথ সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়। সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ২০১৪ সালে বাংলাদেশে রাশিয়ান সাংস্কৃতিক উৎসব ও রাশিয়ায় বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘন্টা,নভেম্বর ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।