ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাংবাদিকদের উপর বেজায় ক্ষোভ যুবলীগ চেয়ারম্যানের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৪
সাংবাদিকদের উপর বেজায় ক্ষোভ যুবলীগ চেয়ারম্যানের ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ছাত্রলীগ-যুবলীগের সমালোচনা করায় সংবাদপত্র, সাংবাদিকদের উপর চরম ক্ষুব্ধ হয়েছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান মো.ওমর ফারুক। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার চট্টগ্রামে আয়োজিত যুব জাগরণ কর্মসূচী উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি অকপটে জানিয়েছেন এ ক্ষোভের কথা।



কঠে‍ার ভাষায় সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে আবার সমালোচনাকে সহজভাবে গ্রহণ করার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওমর ফারুক।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, সমালোচনা, সমালোচনা সমালোচনা।
আমি বলব, সমালোচনা প্রশংসার নামান্তর। সমালোচনা মানেই খারাপ নয়।

ওমর ফারুকের এ বক্তব্যের সময় যুব জাগরণ কর্মসূচীর মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

ওমর ফারুক গণমাধ্যমে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সমালোচনার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, কথা নেই, বার্তা নেই পত্রিকার পাতায় শুধু ছাত্রলীগ-যুবলীগ, শুধ‍ু ছাত্রলীগ-যুবলীগ।

তিনি ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, আরে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কি করেছে ? আমি বলব, ছাত্রলীগ-যুবলীগ সাংবাদিকদের মুখোশ উন্মোচন করেছে।

তিনি বলেন, আধুনিক বিশ্বে প্রচার হচ্ছে রাজনীতির অন্যতম বড় হাতিয়ার। আমি যুবলীগের দায়িত্ব নেয়ার পর চেয়েছিলাম পত্রিকার এক পৃষ্ঠায় যুবলীগের কর্মকান্ড নিয়ে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করব। ওমা, দেখি এক এক পৃষ্ঠা সাপ্লিমেন্টের জন্য ১০ লক্ষ টাকা, ২০ লক্ষ টাকা দাবি করে। এটা তো সম্ভব নয়। তাহলে আমার প্রচারের জায়গা কোথায় ?

ওমর ফারুক উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি বক্তব্য দিয়েছেন  একরকম, তারা লিখবে আরেকরকম। প্রতিনিয়ত খবর টুইস্ট করা হয়। এমন কথাও লেখা হয় যেটা আপনি বলেননি। এক চিমটি মিষ্টি, অর্ধেক চিনি, অর্ধেক লেবু, অর্ধেক গুঁড়া মসলা দিয়ে এখন সাংবাদিকরা খবর পরিবেশন করে।

তিনি বলেন, অসাধু, উদ্দেশ্যপরায়ণ সাংবাদিকদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন দায়িত্ব হয়ে পড়েছে।

যুবলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, এই যে যুব জাগরণ কর্মসূচী করছেন, আপনি যতই ভাল কথা বলুন সেটা সাংবাদিকরা লিখবেন না। এখানে যে একটু-আধটু ধাক্কাধাক্কি হচ্ছে কাল সেটাই দেখবেন পত্রিকার পাতায় বড় করে ছাপা হয়েছে। এখন সাংবাদিকদের কাছে আপনার অর্জনের খবর পাবেন না, শুধু বিসর্জনের খবর পাবেন।

এসময় আবার রাজনীতির চলমান অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আসলে রাজনীতিটাই এমন হয়ে গেছে। এই যে যুবলীগ একটা প্রোগ্রাম করছে এটা যদি ভালভাবে শেষ হয় তাহলে সেটা বড় কোন বিষয় না। মহিউদ্দিন (এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী) ভাই, মোশাররফ (ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন) ভাইকে ফোন করলে তারা ফোনও ধরতেন না। কিন্তু এখানে যদি বোমা ফুটত, ঠিকই সকলে আসতেন, হল ভরে যেত।

তিনি বলেন, এসবের মূলে আসলে জিয়াউর রহমান। তিনি রাজনীতিকে কঠিন করে দিয়ে গেছেন।

ওমর ফারুক সাংবাদিকদের নাম উল্লেখ না করে বলেন, আসলে কমন সেন্স নেই। কমন সেন্স যেটাকে আমরা সাধারণ জ্ঞান বলি সেটা তাদের নেই। দু:খজনক হচ্ছে তাদের জন্য কমন সেন্সের কোন ট্রেনিং সেন্টারও নেই। থাকবে কোত্থেকে, যাদের হাতে টাকা আছে তারাই তো পত্রিকা, টেলিভিশনের মালিক হয়ে গেছেন।

যুবলীগ চেয়ারম্যানের এ বক্তব্যের সময় দর্শক সারিতে থাকা কর্মীদের মধ্য থেকে কেউ কেউ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে ‘সাংঘাতিক’ বলে মন্তব্য করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।