ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনার মামলার সাক্ষ্য পেছাল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪
বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনার মামলার সাক্ষ্য পেছাল ছবি: ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর বহ্দ্দারহাটে সিডিএ’র নির্মিত ফ্লাইওভারে দুর্ঘটনার মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি। সাক্ষী না আসায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে।



রোববার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো.ওবায়দুস সোবহানের আদালতে এ মামলার বাদি চান্দগাঁও থানার এস আই আবুল ‍কালাম আজাদের সাক্ষ্য দেয়ার কথা ছিল।

বাদি আসায় আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে ২৯ অক্টোবর পরবর্তী সময় নির্ধারণ করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো.ওমর ফুয়াদ বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।


গত ১৮ জুন আদালত এ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত ৮ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। ১৬ জুলাই থেকে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারিত থাকলেও বিচারকশূন্যতায় তা হয়নি।

এর আগে ২০১৩ সালের ২৪ অক্টোবর চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম শহীদুল ইসলাম ঘটনার দায় থেকে সিডিএ কর্মকর্তাসহ প্রভাবশালী সব আসামীদের বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত ২৫ আসামীর মধ্যে ১৮ জনকেই বাদ দেয়া হয়। আসামী করা হয় এজাহারবর্হিভূত একজনসহ মোট ৮ জনকে।

আসামীরা হলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার এন্ড পারিশা ট্রেড সিস্টেমসের (জেভি) পক্ষে তৎকালীন প্রকল্প ব্যবস্থাপক গিয়াস উদ্দিন, সুপারভিশন ইঞ্জিনিয়ার মনজুরুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জলিল, আমিনুর রহমান, আব্দুল হাই, মো.মোশাররফ হোসেন রিয়াজ, কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ার শাহজাহান আলী এবং এজাহারে নাম না থাকা রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। এরা সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর নগরীর বহদ্দারহাটে সিডিএ’র নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের ১২ ও ১৩ নম্বর স্পেনের তিনটি গার্ডার ভেঙে পড়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয় অর্ধশতাধিক।

এ ঘটনায় ২৬ নভেম্বর সিডিএ’র তিন কর্মকর্তা, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার এন্ড পারিশা ট্রেড সিস্টেমসের (জেভি) ১০ জন এবং বেসরকারী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এসএআরএম অ্যাসোসিয়েটস এন্ড ডিপিএম'র ১২ জনসহ মোট ২৫ জনকে আসামী করে নগরীর চান্দগাঁও থানায় একটি মামলা দায়ের করেন এস আই আবুল কালাম আজাদ।

অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তদন্তকারী কর্মকর্তা এজাহারভুক্ত ২৫ আসামীর মধ্যে ১৮ জনকে বাদ দিয়েছেন। বদ পড়াদের মধ্যে সিডিএ’র তিন কর্মকর্তা আছেন। এরা হলেন, ফাইওভারের তৎকালীন প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ'র নির্বাহী প্রকৌশলী এ এ এম হাবিবুর রহমান, সিডিএ'র সহকারী প্রকৌশলী তানজিব হোসেন ও উপসহকারী প্রকৌশলী সালাহ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী।

ঘটনার দায় থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন মীর আক্তার এন্ড পারিশা ট্রেড সিস্টেমস (জেভি) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুর রাজ্জাকসহ তিনজন। পরমর্শক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মতিন সহ ১২ জন আসামীর কারও বিরুদ্ধে তদন্তকারী কর্মকর্তা কোন অভিযোগের প্রমাণ পাননি।  

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত এজাহারভুক্ত আসামী গিয়াস উদ্দিন, মনজুরুল ইসলাম, আব্দুল জলিল, আমিনুর রহমান, আব্দুল হাই, মো.মোশাররফ হোসেন রিয়াজ, শাহজাহান আলী এবং রফিকুল ইসলাম মিলে সিডিএ কর্তৃপক্ষ এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অনুমতি না নিয়ে এবং ওইদিনের অনুমোদিত কর্মপরিকল্পনার বাইরে গিয়ে ২৪ নভেম্বর শনিবার ছুটির দিনে সন্ধ্যার পর শ্রমিকদের দিয়ে নির্মাণ কাজ চালাচ্ছিলেন।

এতে আরও বলা হয়, ফ্লাইওভার নির্মাণ ‍অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, মানব জীবন বিপন্ন হবার সম্ভাবনা আছে জানা স্বত্ত্বেও সতর্কতা অবলম্বন না করে এবং নিরাপত্তামূলকভাবে গার্ডার নির্মাণের সময় জনসাধারণের চলাচলে কোন ব্যারিকেড না দিয়ে নির্মাণ স্থান অরক্ষিত রেখে এবং আলোর ব্যবস্থা না করে কাজ করছিলেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, তদন্তকালে সিডিএ’র তিন কর্মকর্তাসহ ১৮ আসামীর বিরুদ্ধে কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। অভিযুক্তরা বিনা অনুমতিতে কাজ করায় তাদের আসামী করা হয়েছে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

উল্লেখ্য দুর্ঘটনার পর ফ্লাইওভার নির্মাণকাজ সেনাবাহিনীর তত্তাবধানে সম্পন্ন হয়। ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর জনসাধারণের চলাচলের জন্য ফ্লাইওভার উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।