ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বরাদ্দ না মেলায় চলছে জোড়াতালির সড়ক সংস্কার

আবদুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৪
বরাদ্দ না মেলায় চলছে জোড়াতালির সড়ক সংস্কার

চট্টগ্রাম: বরাদ্দ না মেলায় জোড়াতালিতে চলছে ভারী বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্থ বন্দরনগরীর সড়ক সংস্কার কাজ। দু’দফায় বরাদ্দ চাওয়া হলেও মন্ত্রণালয় থেকে কোন অর্থ বরাদ্দ পায়নি নগরীর সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।



ফলে নিজস্ব অর্থায়নে খানা-খন্দ ভরাট করে দায় সারছে প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু জোড়াতালির এই কাজ ধুয়ে যাচ্ছে ভারী বৃষ্টিতে।
অবস্থা সেই আগের মতোই। বড় বড় গর্ত আর কাদা-পানিতে একাকার সড়কে যাতায়াতের সময় প্রাণ ওষ্ঠাগত হচ্ছে যাত্রীদের।

বুধবার থেকে নিজস্ব অর্থায়নে এয়ারপোর্ট থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত ২২কিলোমিটার সড়কের খানা-খন্দ সংস্কার করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। এক সপ্তাহের মধ্যে কর্পোরেশনের ৫টি প্রকৌশল বিভাগকে কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন সিটি মেয়র এম মনজুর আলম।

সিটি কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে প্রায় ৭৪৫ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে ৫০০ কিলোমিটার কার্পেটিং করা। গত জুন মাসের শেষের দিকে টানা বৃষ্টিতে পানি জমে প্রায় ১০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এরপর মন্ত্রণালয়ের কাছে সড়ক সংস্কারের জন্য বরাদ্দ চায় সিটি কর্পোরেশন। বরাদ্দ না পেয়ে নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন জায়গায় পাথর ও বিটুমিনের আস্তরণ দেওয়া হয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে ভরাট করা হয় সড়কের খানা-খন্দ।

গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে বিটুমিন ধুয়ে মুছে যায়। নগরীর প্রধান সড়ক বিমানবন্দর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়কের অবস্থা বেহাল হয়ে পড়ে। সৃষ্টি হয় বড় বড় খানা-খন্দক। বরাদ্দ না মিললেও নিজস্ব অর্থায়নে এ সড়কটি সংস্কার করবে সিটি কর্পোরেশন।

সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোসাইন বাংলানিউজকে বলেন,‘এয়ারপোর্ট থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত ২২কিলোমিটার সড়কে কর্পোরেশনের ৫টি ডিভিশন একযোগে কাজ করবে। আগামী বুধবার থেকে কাজ শুরু করা হবে। কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে পাথর ও বিটুমিন দিয়ে সড়কটির খানা-খন্দ ভরাট করা হবে। ’

কর্পোরেশন সূত্র জানায়, নগরীর সড়ক কার্পেটিংয়ের জন্য কর্পোরেশনের একটি মাত্র এসফল্ট প্ল্যান্ট রয়েছে। প্রতিবছর একটি এসফল্ট প্ল্যান্ট দিয়ে বিশাল সড়ক এলাকা কার্পেটিং করতে হিমশিম খেতে হয় কর্পোরেশনকে।

নগরীর কালুরঘাট এলাকায় নতুন আরেকটি এসফল্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ করতে ২০০কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। এ বছরের ৯ ফেব্রুয়ারী প্রকল্প প্রস্তাব স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। একই মাসে প্রকল্পটি  মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ৬মাস পার হলেও প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ পায়নি কর্পোরেশন।

গত ২০ থেকে ২৩ জুনের টানা বৃষ্টিতে নগরীর ১০০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২৬ জুন সড়ক সংস্কারে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ২২ কোটি টাকা বিশেষ থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়।

চিঠিতে টানা বৃষ্ঠিতে নগরীর সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উল্লেখ করে সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় সড়ক সংস্কারে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কাছে বিশেষ থোক বরাদ্দের আবেদন জানান মেয়র এম মনজুর আলম।

সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম মনজুর আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘নগরবাসীর করের টাকায় সিটি কর্পোরেশন ব্যয় নির্বাহ করা হয়। শুধুমাত্র করের টাকা দিয়ে নগরীর এত বিশাল সড়ক এলাকা সংস্কার সম্ভব নয়। সড়ক সংস্কারের জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছে থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এখনো পর্যন্ত কোন বরাদ্দ পাইনি। আপাতত প্রায় ২কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা হবে। বৃষ্টি না থাকলে এক সপ্তাহের মধ্যে এ সংস্কার কাজ শেষ করা হবে। বাকি সড়কগুলোও মেরামত করতে প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘বরাদ্দ পেলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নগরীর সব সড়ক পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।