ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পতেঙ্গা-ফয়’সলেকে জনস্রোত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৪
পতেঙ্গা-ফয়’সলেকে জনস্রোত ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: কখনও আকাশে কাল মেঘ, মুহুর্তেই আবার তীব্র রোদ। প্রকৃতির এ খামখেয়ালীকে সঙ্গী করে বুধবার সকাল থেকে মানুষ ছুটেছে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে।

দুপুর গড়াতেই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে সৃষ্টি হয়েছে জনস্রোত।

বর্ষাকাল হলেও গত তিনদিন নগরীতে তেমন কোন বৃষ্টিপাত নেই।
শান্ত আবহাওয়ায় মানুষের মন-মেজাজও ফুরফুরে।  

নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে নতুন জামাকাপড় পড়ে কেউ কেউ বেরিয়ে পড়েছেন রাস্তায়, আবার কেউ কেউ রিক্সা কিংবা অটোরিক্সা করে যাচ্ছেন। অধিকাংশেরই গন্তব্য স্বজনের বাড়ি নয়, এবার তাদের যাত্রা বিনোদন কেন্দ্রের দিকে।

নগরীর কাজির দেউড়ির মোড়ে ছাতা মাথায় দু’শিশুকে নিয়ে শিশুপার্কের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন বেসরকারী ব্যাংকের কর্মকর্তা ‍সালেহিন রনি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘কাল (বৃহস্পতিবার) থেকে তো আবার ব্যাংক খোলা। কোথাও যেতে পারবনা। তাই ছেলেমেয়ে দু’টাকে নিয়ে একটু শিশু পার্ক যাচ্ছি। ’

বিকেলে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে মানুষের ঢল নেমেছে। শিশু, কিশোর-কিশোরী থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ সৈকতে এসে আনন্দে মেতেছেন। কেউ কেউ স্পিডবোট নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সাগরে, আবার কেউ কেউ ঢেউয়ের মধ্যে ভাসিয়ে দিয়েছেন নিজেকে।

বাস ভাড়া করে সীতাকুন্ড, মিরসরাই, ফেনী থেকেও লোকজন বেড়াতে এসেছেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। ফেনী থেকে বন্ধুবান্ধবসহ বেড়াতে আসা যুবক দেলোয়ার বাংলানিউজকে বলেন, ‘সকালে চট্টগ্রামে এসেছি। প্রথমে ফয়’সলেক গেছি। বিকেলে এসেছি পতেঙ্গায়। ’

বান্ধবীদের নিয়ে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে গেছেন ত্রিশোর্ধ গৃহবধূ শিমু দাশ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার এক ছেলে। তাদের বাসায় রেখে এসেছি। একটা দিন বান্ধবীদের নিয়ে একটু মজা করছি। কাল (বৃহস্পতিবার) থেকে ঈদের ছুটি শেষ হয়ে গেলে তো আর পারবনা। ’

ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত যেন সেজেছে অপরুপ সাজে। বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে অসংখ্য দোকান। পুলিশ সৈকতে দু’টি সেবাকেন্দ্র খুলেছে। স্থানীয় কমিউনিটি পুলিশের উদ্যোগেও সেবাকেন্দ্র খুলে লোকজনকে সতর্ক করতে মাইকিং কর‍া হচ্ছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (বন্দর) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঈদের দিনের চেয়ে আজ (শনিবার) মানুষ বেশি হয়েছে। কাল আবহাওয়া ভাল থাকলে আরও বেশি হবে। ’

পতেঙ্গা সৈকতের অদূরে নেভাল একাডেমির আশপাশেও যেন বসেছে মানুষের মিলনমেলা। বিভিন্ন গাড়ি নিয়ে দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন বিভিন্ন বয়সী নারী, পুরুষ। কেউ কেউ কাঁকড়া ভাজা কিনে খাচ্ছেন, আবার কারও হাতে কোল্ড ড্রিংকস।

একই এলাকায় বাটারফ্লাই পার্কেও চলছে ঈদ উৎসব। সেখানেও দেখা গেছে, শিশুদের নিয়ে তাদের বাবা-মা ভিড় করেছেন। নানা রঙের, নানা প্রজাতির অসংখ্য প্রজাপতির ভিড়ে পুরো পার্ক জুড়ে ছুটোছুটি করছেন শিশুরা।

এদিকে বুধবার সকাল থেকে উপচে পড়া ভিড় তৈরি হয়েছে ফয়’সলেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কেও। শুধু চট্টগ্রাম কিংবা আশপাশের লোকজন নয়, দূরদূরান্তের লোকজনও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছুটে এসেছেন ফয়’সলেকে, উঠেছেন বিভিন্ন কটেজে।

অ্যামিউজমেণ্ট পার্কের সহকারী ব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিতে চট্টগ্রামের বাইরে থেকে লোকজনই বেশি ফয়’সলেকে এসেছেন। অনেকে গাড়ি নিয়ে এসেছেন, দিনভর বেরিয়ে আবার বিকেলে চলে যাচ্ছেন অন্য কোথাও। অনেকে আবার কটেজ ভাড়া নিয়ে উঠেছেন।

তিনি জানান, বুধবার সকাল থেকে প্রতি ঘণ্টায় ফয়’স লেকে ৮’শ আর ওয়াটার পার্কে ৫’শ লোক জড়ো হয়েছেন। বিকেলে প্রায় ৫ হাজার বিনোদনপিয়াসী মানুষের উপস্থিতিতে উপচে পড়া ভিড় তৈরি হয়েছে ফয়’স লেক জুড়ে।

এদিকে বিনোদন পিয়াসী নারী পুরুষ, শিশু জড়ো হয়েছেন তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর উপরও। বুধবার বিকেল থেকে সেতুর রেলিং ধরে নদীর সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন শত, শত মানুষ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০,২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।