চট্টগ্রাম: কখনও মেঘ, কখনও রোদ আর হালকা গরম। মোটামুটি স্বস্তিদায়ক এ আবহাওয়াকে সঙ্গী করে ঈদুল ফিতরের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছেন বন্দরনগরীর মানুষ।
ঈদের নামাজ আদায়ের পর থেকেই শিশু, কিশোর থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত নানা বয়সী মানুষ ঘরে বসে থাকেননি।
রাস্তাঘাটে, বাড়িতে বাড়িতে, বাসায় পরস্পরের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়, করমর্দন, খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে মঙ্গলবার সকাল পার করেছেন বন্দরনগরীর মানুষ।
এরপর বিকেল হতেই বিনোদনপিয়াসী চট্টগ্রামের নারী, পুরুষ, শিশু ছুটেছেন বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে।
বয়সের কাছে বেমানান হলেও অনেকের চোখে রঙীন চশমা, কারও পরণে পায়জামা-পাঞ্জাবি, কারও পরণে জিনস-টি শার্ট, মেয়েদের পরণে নানা ডিজাইনের সালোয়ার কামিজ, কেউ পরেছেন শাড়ি, আবার কেউ জিনস-ফতুয়া।
নানাবয়সী নারী-পুরুষের হইহুল্লোড়, কথামালা, শিশুর আনন্দ ঈদ বিনোদনে যোগ করেছে বাড়তি অনুষঙ্গ।
চট্টগ্রামবাসীর কাছে যেন সমুদ্রসৈকত আর পাহাড়ের আকর্ষণই বেশি। মঙ্গলবার বিকেল থেকে বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে মানুষের আনাগোণা শুরু হলেও সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, উপচে পড়া ভিড় হবে বুধবার সকাল থেকে।
বরাবরের মতো এবারও মানুষের আনাগোণা বেশি ফয়’স লেক, ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত আর বিভিন্ন শিশুপার্কে।
ফয়’সলেক অ্যামিউজমেন্ট পার্কের সহকারী ব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ফয়’সলেকে কাল (বুধবার) থেকে মানুষের ভিড় বাড়বে। কমপক্ষে ১০ দিন মানুষের খুব বেশি চাপ থাকবে। সব বিনোদন কেন্দ্রেই কাল (বুধবার) সকাল থেকে মানুষের ভিড় বাড়বে। ’
তবে মঙ্গলবার বিকেল থেকেই শুরু হয়েছে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে মানুষের ভিড়। দলে দলে বিভিন্ন বয়সী নারী, পরুষ, শিশু জড়ো হয়েছেন প্রকৃতির অপরূপ নিসর্গমন্ডিত এ সৈকতে।
নগরীর আসকার দিঘীর পাড় এলাকার বাসিন্দা গার্মেণ্টস কর্মকর্তা মাহবুব রশীদ স্ত্রী, সন্তানদের নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে গেছেন পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সুযোগ পেলেই আমরা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, নেভাল জেটিতে আসি। কিন্তু ঈদের সময় আসা আর এমনিতে আসার মধ্যে তুলনা হয়না। ঈদের ছুটিতে আসাটা বাড়তি আনন্দের।
বন্ধুদের নিয়ে সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে যাওয়া আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শহরে যারা আছেন তারাই যে শুধু সমুদ্র সৈকতে এসেছেন তা নয়। অনেকে গ্রাম থেকেও ছুটে এসেছেন।
নগর পুলিশের বন্দর জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর ঈদে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এবং নেভাল জেটিতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এবারও আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
তবে অনেকেই আবার ঈদের দিনই আচার-অনুষ্ঠান সেরে ছুটেছেন কক্সবাজার কিংবা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি আর রাঙামাটিতে পাহাড় ও সাগরের সঙ্গে মিতালী গড়তে।
নগরীর লালখান বাজার এলাকার বাসিন্দা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ইউসুফ সোহেল বন্ধুদের নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে ছুটেছেন রাঙামাটির দিকে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের ছুটিটা এবার পাহাড়ে কাটাতে চাই। বৃষ্টি এলে পাহাড়ে বৃষ্টিতে ভিজব।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ঘণ্টা, জুলাই ২৯,২০১৪