ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামের আবাসিক এলাকায় এবারও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৪
চট্টগ্রামের আবাসিক এলাকায় এবারও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা

চট্টগ্রাম: ঈদের ছুটিতে ফাঁকা হয়ে যাওয়া নগরীতে গত বছরের মতো এবারও আবাসিক এলাকার নিরাপত্তার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি বাণিজ্যিক ভবন কিংবা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও বেশকিছু নিরাপত্তা কৌশল চূড়ান্ত করা হয়েছে।



রমজানের মতো ঈদেও নগরীতে থাকছে পুলিশের তিন স্তরের নিরাপত্তা। রমজানে মাঠে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত প্রায় এক হাজার পুলিশ সদস্যকে ব্যারাকে ফেরত না পাঠিয়ে ঈদের সময় বিভিন্ন থানায় ভাগ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিএমপি।


নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, অতীতে দেখেছি, আবাসিক এলাকাগুলো ঈদের ছুটিতে একেবারে ফাঁকা হয়ে যায় আর এর সুযোগ নেয় অপরাধীরা। এবার আমরা আবাসিক এলাকাগুলোকে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোও সক্রিয় নজরদারির মধ্যে থাকবে।  

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তার জন্য নগরীর ২০৫টি আবাসিক এলাকার তালিকা করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় ৭৪টি, আকবর শাহ থানায় ২৩টি, খুলশীতে ২২টি, ডবলমুরিং থানায় ১৫টি, পাঁচলাইশ থানায় ১৭টি, কোতয়ালী থানায় একটি, কর্ণফুলী, ইপিজেড, সদরঘাট ও বাকলিয়া থানায় ৪টি করে ১৬টি, চান্দগাঁও, পতেঙ্গা ও পাহাড়তলী থানায় ৭টি করে ২১টি, চকবাজার থানায় ৮টি, বন্দর থানায় ৩টি, হালিশহর থানায় ৫টি আবাসিক এলাকা তালিকায় স্থান পেয়েছে।

সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে সব আবাসিক এলাকার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নাম ও মোবাইল নম্বর নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করেছে পুলিশ। তাদের সঙ্গে পুলিশের পক্ষ থেকে যোগাযোগও করা হয়েছে।

ঈদের ছুটিতে সংশ্লিষ্ট আবাসিক এলাকাগুলোর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের চাহিদা এবং পরামর্শের ভিত্তিতে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। আর আবাসিক এলাকার মধ্যে বিভিন্ন ভবনে কিংবা বাসার ফটকে গিয়ে তাৎক্ষণিক তল্লাশি করাসহ সার্বিক বিষয়ে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা একসঙ্গে কাজ করবেন।

পুলিশের মতে, নগরীর পাড়া-মহল্লাগুলো আবাসিক এলাকার মত খালি হয়না। তবে এসময় পাড়া-মহল্লায় কিছু সামাজিক অপরাধ ঘটে। আবাসিক এলাকাগুলোতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার পাশাপাশি পাড়া-মহল্লাগুলোর নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, ঈদের ছুটির সময় পাড়া-মহল্লায় টহল বাড়ানোর জন্য ওসিদের নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। এজন্য থানায় ওসিদের চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত পুলিশও দেয়া হয়েছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে নতুন কাউকে নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগ না দেবার অনুরোধ করেছি। আগে থেকে নিয়োজিত নিরাপত্তা কর্মীদের ছবি আমরা সংগ্রহ করেছি। সহজে যাতে নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে পুলিশ যোগাযোগ করতে পারে সেই ব্যবস্থাও করেছি।

সূত্র জানায়, রমজানে তিন স্তরের নিরাপত্তা অংশ হিসেবে থাকা দু’টি টহল টিমের মধ্যে হোন্ডা টিমের সদস্যদের ঈদের আগের দিন প্রত্যাহার করে নেয়া হবে। তাদের বিভিন্ন থানায় ভাগ করে পাঠিয়ে দেয়া হবে। তবে ফুট পেট্রল টিম ঈদের বন্ধে চালু থাকবে। এছাড়া নগরীর কমপে ৮০টি পয়েন্টে দু’শিফটে ভাগ হয়ে স্থায়ী ডিউটিতে থাকবে পুলিশের টিম।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রমজানের মত ঈদেও পুলিশ নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টকে তিন ভাগে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে নিরাপত্তার জন্য স্পর্শকাতর পয়েন্ট আছে কমপক্ষে ৩০টি। বাকি আরও কমপক্ষে ৫০টি পয়েন্ট আছে যেগুলো শুধু গুরুত্বপূর্ণ এবং মোটামুটি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব টিমে দায়িত্ব পালনের জন্য ১০৫টি টিম গঠন করা হয়েছে।

নগরীর ৮০টি টিমে দায়িত্ব পালনের জন্য গঠন করা ১০৫টি টিমে অতিরিক্ত দেড় হাজার পুলিশ সদস্য অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

সার্বিক নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদার বাংলানিউজকে বলেন, অতিরিক্ত ফোর্স দিতে গিয়ে আমরা এবার তেমন কাউকে ছুটি দিতে পারিনি। যাচাইবাছাই করে খুবই নগন্য সংখ্যক পুলিশ সদস্যের ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩২ ঘণ্টা, জুলাই ২৮,২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।