চট্টগ্রাম: বছর ঘুরে সন্নিকটে ঈদ। আর ঈদ মানেই অনাবিল আনন্দ।
নতুন নোটের এ চাহিদাকে মাথায় রেখে তাই এবারও গ্রাহকদের কাছে নতুন নোট পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে ব্যাংকগুলো। কিন্তু, ব্যাংক থেকে নোট নেওয়ার ভোগান্তির কারণে নতুন টাকার জমজমাট ব্যবসা চলছে নগরীর বিভিন্ন ফুটপাতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকসূত্রে জানা গেছে, ঈদ চাহিদার কথা মাথায় রেখে এ বছর ২২ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হয়েছে।
এর মধ্যে চট্টগ্রামের গ্রাহকদের জন্য প্রথম দফায় বিভিন্ন ব্যাংকে প্রায় ৮৫ কোটি টাকা সরবরাহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এসব টাকা গ্রাহকদের মধ্যে বিতরন করা হচ্ছে।
এছাড়া পাঁচটি বানিজ্যিক ব্যাংকের নির্দিষ্ট পাঁচটি শাখার জন্য নতুন নোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলো হল সোনালী ব্যাংকের বহদ্দারহাট শাখা, জনতা ব্যাংকের ওয়াসা শাখা, অগ্রনী ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখা, ইসলামী ব্যাংকের পাহাড়তলী শাখা, পূবালী ব্যাংকের ইপিজেড শাখা।
নগরবাসীর ভোগান্তি এড়াতে এসব ব্যাংকের মাধ্যমে নতুন টাকা বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বানিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে বিড়ম্বনার সুযোগে নতুন টাকা সংগ্রহের নির্ভরযোগ্য স্থান হয়ে ওঠেছে নগরীর নিউমার্কেট মোড়সহ বিভিন্ন ফুটপাত।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে নগরীর নিউ মার্কেট মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের ফুটপাত,আদালত ভবনের প্রবশ পথের পার্শ্ববর্তী ফুটপাতে দেদারছে চলছে নতুন টাকার ব্যবসা।
বিক্রেতারা নির্ধারিত কমিশনে নতুন নোট বিক্রি করছেন।
প্রতিবারের মতো এবারের ঈদেও ২ টাকা ৫ টাকা, ১০ টাকা, ২০ টাকা ও ৫০ টাকার নোটের চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
নিউ মার্কেটের ফুটপাতে দুই টাকার নোটের একটি বান্ডিল (১০০টি) বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা।
এছাড়া পাঁচ টাকার নোটের বান্ডিল ৫২০-৫৩০ টাকা, ১০ টাকার বান্ডিল এক হাজার ৮০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকা, ২০ টাকার বান্ডিল দুই হাজার ১০০ টাকা থেকে দুই হাজার ২০ টাকা ও ৫০ টাকার বান্ডিল বিক্রি হচ্ছে পাঁচ হাজার ২শ ৫০ থেকে পাঁচ হাজার ৩০০ টাকায়।
নিউ মার্কেটের মোড়ে নতুন নোট বিক্রেতা কামরুল বাংলানিউজকে বলেন, ঝামেলা ছাড়া নতুন নোট পাওয়া যায় বলে ফুটপাতে গ্রাহকদের সংখ্যা বেশী।
কমিশন বেশী নিচ্ছেন কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে সামান্য বাড়তি নিচ্ছি। এখানে অনেকেই ব্যবসা করছেন, বেশী কমিশন নিলে আমার কাছ থেকে নতুন নোট কিনবে কেন?
আরেক বিক্রেতা যুবরাজ বাংলানিউজকে বলেন, সব অংকের নোট সংগ্রহে থাকলে বেচাকেনা বেশী হয়। ঈদ সেলামি ছাড়াও যাকাত-ফিতরার জন্যও অনেকে খুচরা টাকা নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এবার ঈদে ১০ টাকা ও ২০ টাকার নোটের চহিদা বেশী।
ঈদ মৌসুমে প্রতিদিন প্রায় ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করা যায় বলে জানান এ বিক্রেতা।
নতুন নোট গুলো কিভাবে সংগ্রহ করা হয় জিজ্ঞেস করলে এক বিক্রেতা বলেন, নতুন টাকার সিংহ ভাগই ঢাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়। নগরীর বিভিন্ন ব্যাংকেও একটি সিন্ডিকেট গ্রাহক সেজে এ নোট সংগ্রহ করে। তাছাড়া ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমেও এ নোট পাওয়া যায়।
নিউ মার্কেট মোড়ে নতুন নোট নিতে আসা নগরীর দেওয়ান বাজারের ফরহাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, ব্যাংকে গিয়ে নতুন নোট সংগ্রহ করা খুব কষ্ট সাধ্য। তাছাড়া ব্যাংকে দালালের সংখ্যাও বেশী। এত ঝামেলায় যায় কে।
তিনি বলেন, ব্যাংকগুলো দিনের নির্দিষ্ট সময়ে খোলা থাকে কিন্তু ফুটপাতে সব সময় এ নতুন নোট পাওয়া যায়। দাম একটু বেশী হলেও ভাল।
এবার ২০ হাজার টাকার নতুন নোট সংগ্রহ করেছেন বলে জানান ফরহাদ।
কাটগড় নারিকেলতলা থেকে আসা সাইদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমি আগামীকাল নেত্রকোনায় গ্রামের বাড়িতে চলে যাব। পরিবারের ছোটদের সেলামি দেওয়ার জন্য নতুন নোট সংগ্রহ করতে এসেছি।
বাংলাদেশ সময় : ২০৪৫ ঘন্টা,জুলাই ২৫,২০১৪