ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বগি সংকট নিয়েই ঈদের যাত্রী পরিবহন শুরু

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১২ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৪
বগি সংকট নিয়েই ঈদের যাত্রী পরিবহন শুরু ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরা নির্বিগ্ন করতে রেলে অতিরিক্ত বগি যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। কিন্তু যাত্রা প্রথমদিন আন্ত:নগর ট্রেনগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে কম কোচ নিয়ে পরিবহন শুরু করেছে।



এতে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনে হিমশিম খেতে হচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগকে। তারা বলছেন, অতিরিক্ত বগি যুক্ত করার বিষয়টি শুভঙ্কারের ফাঁকি।
মেক্যানিক্যাল বিভাগের কিছু কর্মকর্তা প্রকৃত তথ্য আড়াল করে ভুল তথ্য প্রদানের কারণে এমন ঘোষণা দিয়েছেন মন্ত্রী।

রেলওয়ে পরিবহন শাখা সূত্র জানায়, ঘোষণা দেওয়া হলেও  ওয়ার্কশপ থেকে কাঙ্খিত ট্রেনের কোচ পাওয়া যায়নি। ফলে ঈদে সবচেয়ে বেশি  চাহিদা সম্পন্ন ট্রেনগুলোতে বাড়তি কোচ যুক্ত করা যাচ্ছে না।

ঢাকা-সিলেট রুটের  কালনী এক্সপ্রেসের ৫টি, উপবনে ২টি, জয়ন্তীকাতে ২টি সহ  পূর্বাঞ্চলের  ৪২ আন্ত:নগরে প্রায়  ২০টি কোচ  ঘাটতি থাকছে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের আন্ত:নগর ট্রেনগুলোতে স্ট্যান্ডার্ড  কম্পোজিশন  ঠিক রাখলেও  ঢাকা-সিলেট রুটের অধিকাংশ  আন্ত:নগর ট্রেনেই  কোচ ঘাটতি রেখেই  ঈদের ট্রেন চালানো হচ্ছে।

এক্ষেত্রে ঈদের আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের  আন্ত:নগর ট্রেনের  ঘাটতি মেটানো হলেও  ২৮ জুলাইয়ের পর  ঘাটতি থাকবে বলে জানিয়েছেন পরিবহন কর্মকর্তারা।

ওয়ার্কশপ কর্মচারীদের জন্য ব্যবহৃত বিশেষ ট্রেনের  ১১টি কোচ  ২৫ জুলাই থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের  আন্ত:নগর ট্রেনগুলোতে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। সেক্ষেত্রে  পূর্বাঞ্চলের আন্ত:নগর ট্রেনের কোচ ঘাটতি আরও বেশি বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মেকানিক্যাল বিভাগের দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারি বলেন, ঈদে কোচ সংযোজনের বিষয়ে মন্ত্রীসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের ভুল তথ্য দিচ্ছেন কিছু সুবিধাভোগী কর্মকর্তা। পূর্বাঞ্চলে যাত্রীবাহি ৮৩ কোচ সংযোজন করার কথা বলা হলেও ৭৪টির বেশি কোচ সংযোজন হবে না।

পরিবহন বিভাগের একটি সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সূবর্ণ এক্সপ্রেস, গোধূলী ও তূর্ণানীশিতায় ১৮টি করে কোচ থাকার কথা থাকলেও সংকটের কারণে ১৭টি করে চলতো এতোদিন। তবে বৃহস্পতিবার থেকে এসব ট্রেনে একটি করে কোচ যোগ হয়েছে। এছাড়া অন্য ট্রেনে ঘাটতি থাকছেই।

পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ সূত্রে জানা যায়, জুন থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ কোচ মেরামত করা হয়। গত বুধবার ৪টি কোচ মেরামত করে পরিবহন শাখার কাছে  পাঠানো হয়। এছাড়া বৃহস্পতিবার আরও ২২টি কোচ মেরামত করে ঈদের  বিশেষ  ট্রেন ও  বিভিন্ন আন্ত:নগর ট্রেনে  যুক্ত করা হয়।  

তবে মেরামত কোচের অধিকাংশই দ্বিতীয় শ্রেণীর হওয়ায় আন্ত:নগর ট্রেনের কোচ সঙ্কট কাটছে না। ফলে ঘোষণা দেয়া হলেও  ঈদের  যাত্রী পরিবহনে রেলের  ভূমিকায়  প্রশ্ন তুলেছেন খোদ  পরিবহন শাখার  কর্মকর্তারা।

এদিকে ঈদের অগ্রিম টিকেট নেওয়া যাত্রীরা বৃহস্পতিবার থেকে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছেন। প্রথমদিন যাত্রীদের তেমন ভিড় না থাকলেও ঈদের আমেজই বাড়ি ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে কর্মকর্তারা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গত ২০ জুলাই বৃহস্পতিবারের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। তারা বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ট্রেনে যাত্রা করেছেন।

প্রথমদিনের যাত্রায় যাত্রীরা সুষ্ঠুভাবে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রথমদিন যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল না। তবে ঈদের আমেজই বাড়ি ফিরেছেন ঘরমুখো মানুষ।

শুক্রবার থেকে স্টেশনে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় আরো বাড়বে বলে মনে করছেন মিজানুর রহমান।

বাংলাদেশ সময়: ২০১১ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।