ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মালিক-সমিতি নেতাদের যোগসাজশে বাড়ছে ভাড়া

মো. মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৪
মালিক-সমিতি নেতাদের যোগসাজশে বাড়ছে ভাড়া

চট্টগ্রাম: ঈদকে সামনে রেখে বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী পরিবহনে ভাড়া ভাড়ানো হয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। মালিক ও সমিতির নেতাদের যোগসাজশেই ভাড়া বাড়ানো হয়।



যাত্রীরা ভাড়া বাড়ার কারণ খুঁজে না পেলেও মালিকপক্ষ বলছে ব্যবসায়িক স্বার্থেই ভাড়া বাড়ে আবার কমেও।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সংকটময় মুহূর্তে ভাড়া বেশি নেওয়া বাংলাদেশের পরিবহন বিভাগে ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে।
সরকারি নজরদারির অভাবে এ ধরনের অন্যায় কাজ বন্ধ করা যাচ্ছে না।

নগরীর বিআরটিসিসহ বিভিন্ন এলাকায় উত্তরবঙ্গের বাস কাউন্টারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ রুটে ২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কথা স্বীকার করেছেন কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মচারীরা। তারা জানান, ঈদ উপলক্ষে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। ঈদের পরে আবারো পুরনো ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করা হবে।

তবে মালিকপক্ষ বলছে ভিন্ন কথা। তারা জানাচ্ছেন ঈদে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হলেও তা সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি নয়।

বৃহস্পতিবার নগরীর বিআরটিসি এলাকায় কেয়া পরিবহনে রাজশাহী যাওয়ার জন্য শনিবারের অগ্রিম টিকেট কিনতে এসেছেন ফয়সাল মুরাদ। কিন্তু টিকেট না নিয়ে কাউন্টার থেকে বের হলেন তিনি।

বাংলানিউজকে ফয়সাল বলেন, কয়েকদিন আগেও ৭০০ টাকায় রাজশাহী গিয়েছি। এখন তারা ১ হাজার টাকা চাইছে।

কেয়া পরিবহনের কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মচারী আরমান অতিরিক্ত দাম নিয়ে প্রথমে কথা বলতে না চাইলেও পরে জানালেন, ঈদ উপলক্ষে প্রতি বছরই ভাড়া বাড়ানো হয়। এবারও তার ব্যক্তিক্রম হয়নি।

আরমান জানান, কিছুদিন আগেও চট্টগ্রাম থেকে নওগাঁ ৭০০ টাকা, বগুড়া ৬৫০, রংপুর ৭৫০, দিনাজপুর ৮০০, সৈয়দপুর ৭৫০, কুড়িগ্রাম ৮৫০, পাটগ্রাম ৮৫০, হিলি ৮৫০, রুমার ৮৫০, পঞ্চগড় ৮৫০, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৮০০, পাবনা ৭৫০, ঈশ্বরদী ৭০০ এবং চুয়াডাঙ্গা ৭০০ টাকা ভাড়া আদায় করা হতো।

বৃহস্পতিবার বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায়, দিনাজপুরের ভাড়া ৪০০ টাকা ‍বাড়িয়ে ১ হাজার ২০০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। নওগাঁ ১ হাজার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এক হাজার ২০০, রংপুর এক হাজার ১০০, বগুড়া ৯০০, পাটগ্রাম, রুমার, পঞ্চগড়, হিলি  ১ হাজার ৩০০, পাবনা ১ হাজার ১০০ টাকায় টিকেট বিক্রি করা হচ্ছে।

অন্য সময়ের চেয়ে ঈদে ভাড়া বেশি কেন জানতে চাইলে শ্যামলী পরিবহনের একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, অন্য সময়ে যাত্রী সংকট থাকায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ভাড়া কম নেওয়া হয়।

‘ঈদ উপলক্ষে মালিকপক্ষ ও সমিতির নেতারা মিলে ভাড়া বাড়িয়ে দেন। ’   

এ বিষয়ে বাংলাদেশ আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির অফিস সেক্রেটারি মনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা সরকার নির্ধারিত ভাড়া আদায় করছি। অনেক ক্ষেত্রে তার চেয়ে কম নেওয়া হচ্ছে।

ঈদ ছাড়া অন্য সময় সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে কম ভাড়া আদায় করা হয় কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা ব্যবসায়িক স্বার্থে করতে হয়। কারণ তখন যাত্রী সংকট থাকে। তাই কম হলেও পরিবহন করতে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।