চট্টগ্রাম: আজকের তরুণ উদ্যোক্তারা আগামী দিনের ভবিষ্যত। তারা সঠিকভাবে এগোতে পারলেই দেশ উন্নতির শিখরে পৌঁছাবে।
২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আলাপকালে এ দাবি জানান জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) চিটাগাং কসমোপলিটনের প্রেসিডেন্ট এবং অ্যালবিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রাইসুল উদ্দিন।
তরুণ উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণ সমাজকে জনশক্তিতে রূপান্তর, ব্যবসা ও শিল্পোন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে তরুণ উদ্যোক্তা ও শিল্প বান্ধব বাজেট প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারলেই দেশের তরুণ সমাজ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে।
তরুণ উদ্যোক্তা শনাক্তকরণ নীতিমালা, কর অবকাশ সুবিধা, আলাদা শিল্প পার্ক স্থাপন, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান ও রপ্তানি ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে নগদ ইনসেনটিভ প্রদান জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
নারী উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তাদেরও বার্ষিক উন্নয়ন বাজেট থেকে বরাদ্দ রাখতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।
দেশে উৎপাদনকারীদের চাইতে আমদানিকারকরাই বেশি শক্তিশালী মন্তব্য করে তরুণ এ উদ্যোক্তা বলেন, এ ধারা চলতে থাকলে দেশে শিল্প বিকাশ ও শিল্প বিপ্লব হবে না। দেশে প্রকৃত শিল্প বিকাশে দ্রুত শিল্প সংরক্ষণমূলক নীতিমালা প্রণয়ন করা প্রয়োজন।
আগামী বাজেটে দেশে উৎপাদিত পণ্যের অনুরূপ পণ্য এবং অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করতে উচ্চহারে করারোপসহ কঠিন শর্তারোপের পক্ষে মত দেন রাইসুল। এক্ষেত্রে তরুণ ও উদীয়মান শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
বাজেটে শিল্পকে সংরক্ষণ নীতির আওতায় রাখতে সব ধরণের অপ্রয়োজনীয় আমদানির উপর উচ্চহারে করারোপের মাধ্যমে নিরুৎসাহিত এবং রপ্তানি পণ্যের মূল্য দেশে না আসলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দায়ী করে রপ্তানিকারককে ক্ষতিপূরণ প্রদান করার বিধান রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত হলে শিল্প উদ্যোক্তাদের ক্ষতিপূরণ দাবির আইনগত বিধান রাখা যেতে পারে।
ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী নির্ভর নীতির কারণে বিভিন্ন সময়ে পুঁজিবাজারে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ফলে এ খাতে পুঁজি বিনিয়োগ বারবার নিরুৎসাহিত হচ্ছে। কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নির্ভর নীতি বজায় থাকলে এ খাত স্থিতিশীল রাখা সম্ভব নয়।
জেসিআই প্রেসিডেন্ট বলেন, দেশে উৎপাদনকারীদের থেকে আমদানিকারকরাই বেশি শক্তিশালী হওয়াতে সব ক্ষেত্রে তাদের আধিপত্য। এভাবে চলতে থাকলে এ দেশে কোনো দিন শিল্প বিকাশ ও শিল্প বিপ্লব হবে না।
বাজেটে কালো টাকার উৎস বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে নয়তো কালো টাকা বিনিয়োগ করার নীতিমালা তৈরি করতে হবে। কালো টাকা অন্ধকারে থাকলে দেশের কোন লাভ হয় না বরং তা পুঁজিপাচারের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় বলে তিনি মনে করেন।
চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে অবকাঠামো তৈরি জরুরি উল্লেখ করে এজন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ প্রস্তাব এবং স্থাপিত শিল্প ও কলকারখানা সমূহে পর্যাপ্ত গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি।
১৯৯৮ সালের পর দেশে উল্লেখযোগ্য কোন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়নি। অদূর ভবিষ্যতে দেশে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার মতো বৃহদাকার গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের কোন সম্ভাবনা দেখছেন না জেসিআই প্রেসিডেন্ট মো. রাইসুল উদ্দিন সৈকত।
তিনি বলেন, বর্তমানে গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহে ভারসাম্যহীনতা থাকায় দেশী ও বিদেশী সকল বিনিয়োগের ক্ষেত্রে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য এলএনজি আমদানীর মাধ্যমে গ্যাসের চাহিদা ও সরবরাহে পূর্ণ ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা দরকার।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৪