ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

হালদা রক্ষায় ৮ দফা সুপারিশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১২ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৪
হালদা রক্ষায় ৮ দফা সুপারিশ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টফোর.কম

চট্টগ্রাম: রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী রক্ষায় আট দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে হালদা নদী রক্ষা কমিটি।

বুধবার সকালে নগরীর প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।



সুপারিশগুলো হলো- হালদা নদীতে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ করে এধরণের কোন বাঁধ নির্মাণ বন্ধ করা, সেচ-পানি উত্তোলন সংক্রান্ত প্রকল্প গ্রহণের পূর্বে পরিবেশগত প্রভাবসমুহ নিরূপন ও উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় পানির পরিমাণ পর্যালোচনা, হালদা পাড়ের কৃষিজমিতে সেচ প্রদানের জন্য বিকল্প পানির অনুসন্ধান, সর্বস্তরের প্রতিনিধি নিয়ে হালদা নদী ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ গঠন, উজানে পানির প্রবাহ বৃদ্ধির উদ্যোগের মাধ্যমে পানির লবণাক্ততা কমানো, অবৈধ দখল ও ড্রেজিং বন্ধে পরিবেশ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করে ‘প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা, ‘জাতীয় প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ঐতিহ্য’ হিসাবে সংরক্ষণ এবং হালদার মা মাছের সংখ্যা নিরূপনের জন্য শুমারি পরিচালনা করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হালদা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি মো. মনজুরুল কিবরিয়া।
এসময় কমিটির উপদেষ্টা সভাপতি ও ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সিকান্দার খান, সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক মো. আলী, পরিবেশবিদ ইদ্রিস আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হালদা পৃথিবীর একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী যেখান থেকে সরাসরি রুই জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। ৭০ লক্ষ মানুষের জীবন-জীবিকার উপর এর প্রভাব রয়েছে। কিন্তু, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট বিভিন্ন কারণে ঐতিহ্যবাহী এ নদী এখন মহাসংকটের সম্মুখীন।

সাম্প্রতিক সময়ে হালদা নদীর উজান এলাকায় নির্মিত দু’টি রাবার ড্যাম নির্মাণ, ড্রেজার দিয়ে ব্যাপকহারে বালু উত্তলন, দুষণ, মা মাছ ‍নিধন ও হাটহাজারীর হালদা প্যারালাল ইরিগেশন প্রজেক্ট চালুসহ বেশকিছু কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হালদার পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, ‘একটি নদী জীবিত নাকি মৃত তা নির্ভর করে নদীর পানি প্রবাহের উপর। হালদায় অপরিকল্পিত রাবার ড্যাম নির্মাণের মধ্য দিয়ে সে পানি প্রবাহকে ধ্বংস করা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন নদীর বাস্তুতান্ত্রিক পরিবেশ যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে তেমনি অন্যদিকে ভাটি এলাকায় পানির অভাব দিচ্ছে। ’

তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের ৫৪টি নদী রয়েছে। এসব নদীর পানি বন্টন নিয়ে আমরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করি। অথচ, নিজ দেশের অভ্যন্তরেই ব্যক্তি বিশেষের স্বার্থ হাসিলের জন্য অন্যজনকে পানি থেকে বঞ্চিত করছি। এটা জাতীয় পানি নীতি, পরিবেশ আইন ও পানি অধিকার আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ’

অধ্যাপক সিকান্দার খান বলেন, ‘ব্যক্তি বিশেষের ভোটের রাজনীতির কারণে অন্যায়ভাবে উজানের পানি ধরে রাখা হচ্ছে। হালদা নদীর উপর ব্যক্তি বিশেষের মতকে প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। এই নদীর যতো বিকল্প ব্যবহার আছে তার একটি অর্থনৈতিক সমীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমে এ নদীকে রক্ষা করতে হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫০ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।