ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মা-মেয়ে খুন

বন্ধুই খুনী, চার্জশীট আদালতে জমা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৪
বন্ধুই খুনী, চার্জশীট আদালতে জমা রেজিয়া বেগম / সায়মা নাজনীন নিশাত

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীতে মা-মেয়েকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছে পুলিশ।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগপত্রে মেয়ের বন্ধু আবু রায়হান ওরফে আরজু (২১) এবং ভাড়াটে খুনি শহিদকে (২৫) আসামী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আট পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে ৩৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। প্রেমে প্রত্যাখাত হয়ে প্রতিশোধ নিতে রায়হান খুনি শহীদকে ভাড়া করে দু’জনে খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।


রোববার বিকেল ৫টার দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডবলমুরিং থানার এস আই মাঈনউদ্দিন চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখায় অভিযোগপত্রটি জমা দেন।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন)  মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, দুজনকে আসামী এবং ৩৭ জনকে সাক্ষী করে আট পৃষ্ঠার একটি চার্জশীট আমরা পেয়েছি। সোমবার সেটি আদালতে দাখিল করা হবে।

গত ১২ মে চাঞ্চল্যকর এ মামলার অভিযোগপত্রের সাক্ষ্যস্মারক অনুমোদনের জন্য মহানগর পিপি মো.ফখরুদ্দিনের কাছে নিয়ে যান তদন্তকারী কর্মকর্তা। গত সপ্তাহে সেটি অনুমোদন হয়ে থানায় ফেরত যায়।

সূত্র জানায়, অভিযোগপত্রে খুনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রেমে প্রত্যাখাত হয়ে রায়হান খুনের সিদ্ধান্ত নেয়। অস্ত্র কিনতে ব্যর্থ হয়ে রায়হান তার বন্ধু শহিদকে খুনের জন্য ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করে। তারা দু’জনে পাঁচশ টাকায় একটি ছোরা এবং আড়াই’শ টাকায় একটি টোঁটা (দেশীয় অস্ত্র) তৈরি করে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে দু’জনকে কুপিয়ে জখম করে এবং দু’জনের চার পায়ের গোড়ালির রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে।

‌উল্লেখ্য গত ২৪ মার্চ সকালে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার ১৭ নম্বর সড়কে যমুনা নামে একটি ভবনের চতুর্থ তলায় জনৈক সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীর স্ত্রী রেজিয়া বেগম (৫০) এবং মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী সায়মা নাজনীন নিশাতকে (১৬) পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী মো.রেজাউল করিম বাদি হয়ে দু’জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামীরা হল, মেয়ে নিশাতের প্রেমিক আবু রায়হান এবং রায়হানের বন্ধু ও ভাড়াটে খুনি শহীদ।

২৬ মার্চ ভোরে রায়হানকে ঢাকার আরামবাগে একটি হোটেল থেকে এবং শহীদকে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার মাষ্টার লেন থেকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর উভয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

এছাড়া ডবলমুরিং থানা পুলিশ ঘটনার পরপর রায়হানের বন্ধু রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাশেদ এবং হাবিবকে গ্রেপ্তার করে। তবে তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে রায়হান ও নিশাতের এক বছরের সম্পর্ক, পরবর্তীতে রায়হানের নৈতিক স্খলনের বিষয়টি নিশাতের জেনে যাওয়া, দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি, প্রেমে প্রত্যাখাত হওয়া, তাদের খুন করার জন্য রায়হানের পরিকল্পনা এবং খুনের বিস্তারিত বর্ণনা ১৬৪ ধারার জবানবন্দি অনুসারে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।