চট্টগ্রাম: ছাত্রলীগের একাংশের অবরোধের দ্বিতীয় দিন বৃহষ্পতিবার কার্যত অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা।
শাটল ট্রেন চলাচলে বাধা দেওয়ায় এবং নগরী থেকে কোন শিক্ষক বাস চলাচল না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিভাগে ক্লাস ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। অবরোধের কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল কম।
অবরোধকারীরা বলছে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সুমন মামুন বাংলানিউজকে বলেন,‘দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আমাদের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবির প্রতি কর্ণপাত না করে একটি পক্ষকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সন্ত্রাস, মৌলবাদ মুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। ’
এদিকে, ট্রেনের লোকো মাস্টার অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের বিচার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবিতে সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের অপর অংশ।
মিছিলটি দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুর রহমান রবিন বাংলানিউজকে বলেন,‘শাটল ট্রেনে হামলা করা ন্যাক্কারজনক। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় না আনলে কঠোর আন্দোলন শুরু করা হবে। ’
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী শূন্য হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছিলো অনেকটাই প্রাণহীন। প্রশাসনিক ভবনে কর্মকর্তাদের উপস্থিতিও ছিলো অনেক কম।
অবরোধের কারণে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষাগুলোও স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. মহিউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন,‘শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হতে না পারায় বিভাগের পরীক্ষা কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে হুস পাইপ খুলে দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় এক চালককে মারধরেরও অভিযোগ উঠে। ষোলশহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে রেল লাইনের উপর টায়ার জ্বালিয়ে আগুন দেয় তারা।
এতে ট্রেন চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখে। ফলে বৃহস্পতিবারএ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বিকেল চারটা) শাটল ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ উদ দৌলাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। ’
ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সহ সম্পাদক ও চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির হায়দার করিম বাবুলকে লাঞ্ছনাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের দাবিতে সংগঠনের একটি অংশ গত সোমবার ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেয়।
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া ৮ দফা দাবিতে বুধবার থেকে অবরোধের ডাক দেয় তারা।
বাংলাদেশ সময় : ১৬১২ ঘন্টা,৮ এপ্রিল ২০১৪
** হুস পাইপ খুলে নিয়ে ট্রেন চলাচলে বাধা, চালককে মারধর