ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবিতে ছাত্রলীগের অবরোধ

হুস পাইপ খুলে নিয়ে ট্রেন চলাচলে বাধা, চালককে মারধর

চবি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৩ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৪
হুস পাইপ খুলে নিয়ে ট্রেন চলাচলে বাধা, চালককে মারধর ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে ছাত্রলীগের একাংশ। বুধবার সকালে হুস পাইপ খুলে  দিয়ে ছাত্রলীগ কর্মীরা শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়।

এসময় এক চালককে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে।

চালক মারধরের ঘটনায় আবারো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রুটে শাটল ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক-কর্মচারী সমিতি।


সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আলী বাংলানিউজকে বলেন,‘আমাদের এক সহকর্মীকে অপহরণের পর আমরা গতকালই এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিলাম। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছি। কিন্তু, এভাবে চলতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে ট্রেন চালাতে বললে আমাদের ট্রেন চালানো সম্ভব না। আজ থেকে আবার ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। ’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ সম্পাদক নাসির হায়দার বাবুলের লাঞ্ছনাকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবাদে এ অবরোধ কর্মসূচি চলছে।

অবরোধকারীরা বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের মদদে ছাত্রলীগ নামধারী একটি অংশের নেতৃত্বে নাসির হায়দারের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ প্রশাসনকে উপযুক্ত নেওয়ার ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হলেও রহস্যজনকভাবে তারা নির্বিকার। হামলার শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহষ্পতিবার নগরীর ষোলশহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গামী সকাল সাড়ে সাতটার ট্রেনটি ছাড়ার আগেই ট্রেনের হুস পাইপ খুলে নেয় ছাত্রলীগ কর্মীরা। ষোলশহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে রেল লাইনের উপর টায়ার জ্বালিয়ে আগুন দেয় তারা। এতে ট্রেন চলাচলে বা‍ধা সৃষ্টি হয়।

ষোলশহর স্টেশন ম্যানেজর শাহাব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, সকাল এগারোটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে চারটি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলে একটিও ছাড়া সম্ভব হয়নি। অবরোধকারীদের বাধা উপেক্ষা করে ট্রেন চালানোর চেষ্টাকালে আনোয়ার হোসেন (৫০) নামে এক লোকো মাস্টারের উপর হালা করে তারা।

শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সকাল সাড়ে সাতটার ট্রেনটি চালানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ষোলশহর স্টেশনের অদূরে যেতেই ট্রেনের হুস পাইপ খুলে নেওয়া হয়। একই সঙ্গে ট্রেনকে উদ্দেশ্যে করে এলোপাতাড়ি পাথর ছুঁড়ে তারা। ’

ষোলশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আরব আলী বলেন, ‘সকালে শাটল ট্রেনের হুস পাইপ কাটা দেখতে পাই আমরা। কে বা কারা করেছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। ’

শিক্ষার্থীরা জানায়, ট্রেনের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রুটের মিনি বাস ‘তরী’ চলাচলেও বিভিন্ন স্থানে বাধা সৃষ্টি করেছে অবরোধকারীরা।

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী পলাশ দে বলেন,‘শহর থেকে ক্যাম্পাসে যাওয়ার সময় নন্দীর হাট এলাকায় তারা আমাদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়। একই স্থানে অন্তত ৫টি তরী থামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ’

প্রসঙ্গত, গত ৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সহ সম্পাদক নাসির হায়দার বাবুলকে ক্যাম্পাসে জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা।

অবরোধকারীদের একজন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক এস এম আলাউদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘নাসির হায়দার বাবুলের উপর হামলাকারীদের শাস্তি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসীদের মদদদাতা প্রক্টরের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।