ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মাদকের বিস্তারে উদ্বিগ্ন খোদ পুলিশ কমিশনার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫২ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৪
মাদকের বিস্তারে উদ্বিগ্ন খোদ পুলিশ কমিশনার ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর পাড়া, মহল্লায় অবাধে মাদকের বিস্তারের তথ্য তুলে ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ নগর পুলিশ কমিশনার মো.শফিকুল ইসলাম। একইসঙ্গে তিনি মাদক পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করেছেন।



বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম চেম্বার মিলনায়তনে বিভাগীয় পর্যায়ে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিএমপি কমিশনার মাদকের বিস্তার নিয়ে বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেন। একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো.আবদুল্লাহ।


মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর আয়োজিত এ সভায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিএমপি কমিশনার বলেন, নগরীর এমন কোন মহল্লা নাই যেখানে মাদক পাওয়া যায় না। এমন কোন জায়গা নেই যেখানে মাদক বিক্রি হয়না। আমরা যতটুকু উদ্ধার করতে পারি তা পাচারের ক্ষুদ্র অংশ।

তিনি বলেন, আমাদের কর্মকান্ডের পরও মাদকের এমন বিস্তারে প্রমাণ হয় মাদক নির্মুল সম্ভব না। মাদকের যে পরিমাণ চাহিদা তা নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে সম্ভব না। অভিবাবকদের সচেতন হলে এর সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ করা যাবে।

সিএমপি কমিশনার বলেন, সারাদেশের মধ্যে মাদক উদ্ধারে সিএমপি প্রথম হয়েছে কয়েক বছর ধরে। বিষয়টিকে দু’ভাবে ব্যাখা করা যেতে পারে। এর একটি হচ্ছে পুলিশের তৎপরতা। অথবা এমন হতে পারে যে, চট্টগ্রামে হাত বাড়ালে মাদক পাওয়া যায়।  

তিনি বলেন, মাদক নিয়ন্ত্রণ পুলিশের অন্যান্য অনেক কাজের মধ্যে একটি। পুলিশের শত ব্যস্ততার মধ্যে মাদকের নিয়ন্ত্রনের কাজ করতে পারে না। প্রয়েজনীয় জনবলও পুলিশের নেই।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ দেশে মাদক নিয়ন্ত্রন করতে না পারাটা একটি সম্বন্বিত ব্যর্থতা বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, দেশে ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে মাদকসেবীর সংখ্যা ৬০ লাখ আর বিক্রেতার সংখ্যা এক লাখ। আমরা সব মানুষ মিলে তা প্রতিরোধ করতে পারিনি।

বিভিন্ন গবেষণার কথা উল্লেখ করে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, দেশে মাদকসেবীদের মধ্যে ৭৯ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ আর ২০ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। আবার এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮ শতাংশ অবিবাহিত আর ৫৬ শতাংশ বেকার। এর মধ্যে ৯৫ দশমিক ৪ শতাংশ লোক ধূমপায়ী।

তিনি বলেন, অভ্যন্তরীন চাহিদা বন্ধ করা না গেলে মাদক চোরাচালান বন্ধ করা যাবে না।

একই সভায় চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নওশের আলী বলেন, দেশের প্রধান দুই সমস্যার মধ্যে একটি হচ্ছে মাদক। যদিও পৃথিবীর আদি পেশার একটি হচ্ছে এ মাদক ব্যবসা।

তিনি বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এক-দেড় লক্ষ লোকের মধ্যে ১০০ থেকে দেড়’শ লোক খারাপ হতে পারে। এরা হয়ত মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত। এজন্য ব্যক্তি ও সংগঠনকে একসাথে গুলিয়ে ফেলা ঠিক না।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আমীর হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, অধিদপ্তরের ঢাকার পরিচালক মফিজুর রহমান, বিজিবি খাগড়াছড়ি গুঁইমারার সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল শাহরিয়ার রশিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সানাউল হক, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আক্তার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাচ্য ভাষা বিভাগের অধ্যাপক ড.জিনবোধি ভিক্ষু প্রমুখ।

আলোচন সভা শেষে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫২ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।