চট্টগ্রাম: দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে চট্টগ্রামে শিল্পায়ন উপযোগী অবকাঠামো তৈরী করা জরুরী। বাণিজ্য নীতির অব্যাহত সংস্কার, উন্নয়ন ও বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে।
চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রায়োরিটিজ ফর ট্রেড পলিসি এন্ড স্পেশাল ইকনোমিক জোন’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
শনিবার বিকালে চেম্বার মিলনায়তনে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে বাণিজ্য নীতি ও বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চলের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার ও অপারেশন ডাইরেক্টর ড. খুরশীদ আলম। সেমিনারে সূচনা বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নুরুন নেওয়াজ।
আলোচনায় অংশ নেন চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, কোরিয়ান ইপিজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) হাসান নাসির, সিটি কর্পোরেশন সচিব রশিদ আহমেদ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চীফ প্ল্যানিং মনিরুজ্জামান, ডিএফআইডি’র ইকনোমিক উপদেষ্টা ড. স্টুয়ার্ড ডেভিস, বিজিএমইএ’র পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, বিকেএমইএ’র শওকত ওসমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নেতা তাহের সোবহান, আতাউল করিম চৌধুরী, বাফা’র আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ও সহকারী কর কমিশনার মাজহারুল ইসলাম।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য বিশেষায়িত শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে চিটাগাং চেম্বারের পক্ষ থেকে ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের পরিপ্রেক্ষিতে মিরসরাইয়ে ৪ হাজার একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে চট্টগ্রামে শিল্পায়ন উপযোগী অবকাঠামো তৈরী করা জরুরী। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের পাশাপাশি দেশীয় শিল্পকে উৎসাহিত করার জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতিমালাও গ্রহণ করতে হবে।
সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. নুরুন নেওয়াজ বলেন, মিরসরাইয়ে প্রায় ৬ হাজার ৬ শত ১৫ একর এবং আনোয়ারায় ৬ শত ১১ একর জায়গা নিয়ে বাস্তবায়নাধীন জোনে শিল্পায়নের মাধ্যমে রপ্তানি সম্ভার বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র বিমোচন সম্ভব। ভারত, মিয়ানমার ও ভিয়েতনামের মত প্রতিদ্বন্দ্বীদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত বাণিজ্য নীতি দ্রুত বাস্তবায়ন করে জিএসপি সুবিধার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা দরকার।
চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় শিল্প সিরামিকস্, চামড়া ও পাটজাত পণ্য, ঔষধ, জাহাজ নির্মাণ শিল্প এবং মানব সম্পদ উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে বাণিজ্য নীতি সময়োপযোগী করতে হবে।
পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাইদী সাত্তার বলেন, গত তিন দশক ধরে আমাদের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৫ শতাংশ। প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে সক্ষমতায় এগিয়ে যেতে হলে বাণিজ্য ও বাণিজ্য নীতি সংস্কারের ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি উন্নত করা প্রয়োজন। তিনি পঞ্চ-বার্ষিক, দীর্ঘমেয়াদী ও অন্যান্য উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রত্যেক ধাপে এই সংস্কারকে অন্তর্ভূক্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করেন।
পিআরআই অপারেশন ডাইরেক্টর ড. খুরশীদ আলম বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে শিল্পায়নযোগ্য ভূমির চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পিপিপি কনসেপ্ট অনুযায়ী এসব শিল্পাঞ্চল বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা এবং একই লক্ষ্য অর্জনে ভিন্ন ভিন্ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বিভিন্ন পর্যায় থেকে কাজ করার কারণে সৃষ্ট সমস্যা দূর করা উচিত।
সেমিনারে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার সোমনাথ হালদার, চেম্বার পরিচালক ছৈয়দ ছগীর আহমেদ, মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী (স্বপন) ও মো. জাহাঙ্গীর, সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ হাবিবুল হকসহ সরকারী কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৪