চট্টগ্রাম: স্কাই প্রপার্টিজ নামে একটি আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও আদালতের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে আবাসিক ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণ করায় আশ পাশের ভবনগুলো ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।
অভিযোগ রয়েছে, নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বেশ কজন কর্মকর্তা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নগরীর রহমতগঞ্জ এলাকায় ১৩ তলা ভবনের নির্মাণ করছে আবাসন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান স্কাই প্রপার্টিজ। ভবনের পাইলিং কাজ করার সময় প্রতিরক্ষা দেওয়াল নির্মাণ না করায় পার্শ্ববর্তী আম্বিয়া হাউস ও মল্লিক ভবনে ফাটল দেখা দেয়।
১৯ মার্চ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(চউক) থেকে স্কাই প্রপার্টিজকে দেওয়া এক চিঠিতে বলা হয়,‘চলমান কলাম নির্মাণকাজের সঙ্গে অনুমোদিত নকশার অমিল পাওয়া গেছে। বিশেষ করে খালের পাশের বাফার ভূমি ও ছয় তলাবিশিষ্ট দুটি ভবনের সীমানা প্রাচীর হতে প্রয়োজনীয় সেটব্যাক রাখা হচ্ছে না। যার ফলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে বহুলোকের প্রাণহানিসহ জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশংকা রয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হল। অন্যাথায় আপনার/আপনাদের বিরুদ্ধে ইমারত নির্মাণ আইনে সংশ্লিষ্ট ধারায় প্রয়োজনীয় আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
৬ এপ্রিল পাঠানো চউকের এক নির্দেশে তিনদিনের মধ্যে প্রতিরক্ষা দেওয়াল নির্মাণ, পার্শ্ববর্তী ভবনের সংযোগ সড়কের রাস্তা ছেড়ে দেওয়া, নকশা অনুমোদনকালে জমি সংক্রান্ত তথ্য গোপন এবং অনুমতিপত্রের শর্ত ভঙ্গের কারণে নকশা স্থগিত করে নিমার্ণ কাজ বন্ধ রাখার নিদের্শ দেন।
আম্বিয়া হাউসের মালিক খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন,‘পাইলিংয়ের সময় কোনো ধরণের প্রতিরক্ষা দেওয়াল না রাখায় আমাদের ভবনে ফাটল দেখা দেয়। বিষয়টি সিডিএ কর্তৃপক্ষকে জানাই। সিডিএর প্রকৌশলীরা সরেজমিন পরিদর্শন করে দুর্ঘটনার আশংকায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এছাড়া মার্চের ১১ তারিখ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নির্মাণ কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে ভবনের ভাড়াটিয়াসহ পরিবার নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছি। ’
চউকের অথারইজড কর্মকর্তা-২ মোহাম্মদ শামীম বাংলানিউজকে বলেন,‘নকশা অনুযায়ী ও ইমারত বিধি অনুযায়ী কাজ না করায় প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও কাজ বন্ধ রাখা না হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
আবাসন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রয়েছে ছয়জন। এরমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার দাশ হলেন সিটি কর্পোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী ঝুলন দাশের বড় ভাই। নামে তপন কুমার হলেও আসল মালিক হলেন ঝুলন দাশ। প্রতিষ্ঠানটির আরেক অংশীদার কোহিনুর বেগম হলেন কর্পোরেশনের একজন নির্বাহী প্রকৌশলীর ভাইয়ের স্ত্রী। ওই প্রকৌশলী বেনামে প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্কাই প্রপার্টিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কুমার দাশের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৪ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৪