ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ

বাণিজ্যিকীকরণের পাঁয়তারার অভিযোগ, অস্বীকার পরিচালনা কমিটির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১৪
বাণিজ্যিকীকরণের পাঁয়তারার অভিযোগ, অস্বীকার পরিচালনা কমিটির ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের শতবর্ষ প্রাচীন কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের সীমানায় অবৈধভাবে মার্কেট ও খেলার ‍মাঠে কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণের অভিযোগ তুলেছেন প্রতিষ্ঠাতার বংশধররা। শনিবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন এ অভিযোগ করেন তারা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে স্কুল পরিচালনা কমিটি।

স্কুল পরিচালনা কমিটির দাবি, কাজেম আলী মাস্টারের বংশধররা স্কুলটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।
বর্তমান কমিটি সেখান থেকে স্কুলটিকে এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। এখন ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব অভিযোগ করছে তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে শাহরিয়ার খালেদ বলেন, শিক্ষার প্রতি প্রচন্ড অনুরাগী কাজেম আলী মাস্টার কর্তৃক পরম মমতায় প্রতিষ্ঠিত কাজেম আলী হাই স্কুল আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এক শ্রেণীর লুটেরা, স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে স্কুলটি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তার ঐতিহ্যগত ও স্বাভাবিক চরিত্র হারিয়ে ফেলেছে। উক্ত কুচক্রী মহল স্কুল ক্যাম্পাসে ইচ্ছেমতো মার্কেট, দোকান, মিনি চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, কমিউনিটি সেন্টার ইত্যাদি নির্মাণ করে অর্থ লোপাটে লিপ্ত, উপরন্তু তারা এসব কর্মকান্ডকে স্কুলের উন্নয়ন বলে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে।

শাহরিয়ার খালেদ বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপূরণের টাকা তড়িঘড়ি খরচ করে রাতারাতি মার্কেট ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে এবং স্কুলের সম্মুখের খেলার মাঠ বিনষ্ট করে অপর একটি একাডেমিক ভবন নামধারী মার্কেটও বর্তমানে নির্মাণাধীন।

তিনি বলেন, কাজেম আলী মাস্টার নিজ ক্রয়কৃত জমিতে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন শিক্ষার প্রসারের জন্য, বাণিজ্যিকীকরণের জন্য নয়।

তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে স্কুলটিতে চলমান লুটপাত ও অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে  আবেদন জানান।

পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, স্কুলটি সরকারি হওয়ার একটা প্রক্রিয়া ছিল। বর্তমান কমিটি তা বাধাগ্রস্থ করে রেখেছে। তারা চায় না স্কুলটি সরকারি হোক। এছাড়া যে অসম্প্রদায়িক চেতনা থেকে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিল কাজেম আলী মাস্টার তা আজ আর অক্ষুণ্ন নেই। এটি এখন সাম্প্রদায়িক শক্তির আখড়ায় পরিনত হয়েছে।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন,‘ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়ে যাওয়ার পর শাহরিয়ার খালেদের ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে চেয়েছিল। কিন্তু তখন সময় না থাকায় আর ভর্তি করানো সম্ভব হয়নি। তার ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে না পারা এবং স্কুলের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব অভিযোগ করছেন তিনি। ’

তিনি বলেন, ‘স্কুলের ভেতরে কোনো মার্কেট কিংবা কমিউনিটি সেন্টার হচ্ছে না। একটি একাডেমিক ভবন নির্মাণ হচ্ছে। ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ডে যেহেতু ক্লাস নেওয়া সম্ভব না তাই ওটা আলাদা গেইট নির্মাণ করে ভাড়া দেওয়ার চিন্তা ভাবনা আছে। ’

তিনি বলেন, ‘সিডিএ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকায় স্কুল গ্রাউন্ডের বাইরে একটি মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। যার আয় দিয়ে স্কুলের উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে। ’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কাজেম আলী মাস্টারের বংশধররা যখন স্কুলটির কমিটিতে ছিল তখন তারা স্কুলটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। বর্তমানে স্কুলের উন্নয়নে ঈর্ষান্বিত হয়ে এসব অভিযোগ তুলছে তারা। ’

কাজেম আলী মাস্টার স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‍উপস্থিত ছিলেন সিদ্দিক আলম, শাহনেওয়াজ খালেদ, হাসান মুরাদ, অ্যাডভোকেট সোহেল লুৎফুল হাসনাত, শাহ সেলিম খালেদ।

এদিকে স্কুলের পক্ষ থেকে  রোববার দুপুর বারটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।