ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মানুষের কারণেই বিপন্ন হচ্ছে পাখি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৪
মানুষের কারণেই বিপন্ন হচ্ছে পাখি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: মানুষের বাঁচার জন্যই পাখির দরকার আছে মন্তব্য করে পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক পৃথিবী থেকে পাখি বিপন্ন হয়ে যাওয়ার জন্য মানুষকেই দায়ী করেছেন।

তিনি বলেন,‘মানুষ ঘর, বাড়ি, বাস্তা তৈরি করতে গিয়ে জলাশয়, বন উজাড় করছে।

এতে প্রাকৃতির পাখির আবাস নষ্ট হচ্ছে। ফলে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
তাই মানুষই এখন পাখির বড় শত্রু। ’

শুক্রবার দুপুরে বই বিপনী বাতিঘরে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন এই পাখি বিশেষজ্ঞ। ‘পাখি ও পর্যটন’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাতিঘর। এতে অতিথি হিসেবে ছিলেন পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক ও তারেক অণু।

অনুষ্ঠানে শতাধিক পাখি প্রেমি অংশ গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে পাখি দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমনের কাহিনী, সেখানে তোলা বিভিন্ন প্রজাতির পাখির ছবি এবং বিশ্বে বিপন্ন ৫০ প্রজাতির পাখি যাদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম অঞ্চলে এসব পাখির ছবি প্রদর্শন করেন। পাশাপাশি পাখিদের আবাস, বিপন্ন হওয়ার কারণসহ বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন ইনাম আল হক।

অন্যদিকে মায়া, এসটেক ও ইনকা সভ্যতা, উত্তর-দক্ষিণ মেরু এবং ল্যাটিন এমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণের কাহিনীর বর্ণনা দেন তারেক অণু। প্রকৃতি রক্ষা করে কিভাবে পর্যটন গড়ে তোলা যায় সে বিষয়টি তার বক্তব্যে উঠে আসে।  

ইনাম আল হক বলেন, মানুষের সৌখিন স্বভাবের কারণে পাখি বিপন্ন হয়ে যাচ্ছে। আমরা ঘর বানাই, মার্কেট বানাই, রাস্তা তৈরি করি। এজন্য বন, জলাশয়, প্রাকৃতিক স্থান উজাড় করি। ফলে নষ্ট হয় পাখির আবাসস্থল।

‘কিন্তু আমরা এটা বুঝিনা যে আমাদের জন্যই পাখির দরকার আছে। আর তাই পাখি রক্ষা করতে হলে প্রাকৃতিক স্থান, বনাঞ্চল, জলাশয় দরকার। আমাদের স্বার্থেই এসব রক্ষা করতে হবে। ’

মানুষের জন্য প্রাকৃতিক পাখি দরকার কেন? এর ব্যাখা দিয়ে ইনাম আল হক বলেন, যত ধরণের মরা, পঁচা, জিবানুযুক্ত প্রাণী আছে সবই খেত শকুন। তাই পাখিটি প্রকৃতির জন্য খুবই প্রয়োজন। কারণ অনেক ধরণের মরা,পঁচা আছে যা অন্য কোন প্রাণী খেতে পারে না। কিন্তু শকুন খেতে পারে।

তিনি বলেন, এক সময় বনে, বাড়ির আনাচে কানাচে শকুন দেখা যেত। ১৫ বছর আগেও ৪ কোটি শকুন ছিল। কিন্তু বর্তমানে এ পাখিটিকে দেখা যায় না।

ডাইক্লোফেনাক নামে একটি ওষুধ ব্যবহার করে শকুন মেরে ফেলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

হারিয়ে যাওয়া ৫০ প্রজাতির পাখির ছবি প্রদর্শন করেন ইনাম আল হক। এসব পাখি অধিকাংশই চট্টগ্রাম অঞ্চলে বাস করে। এখান থেকে যদি পাখিগুলো হারিয়ে যায় তাহলে বিশ্বে বিপন্ন হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

বিশ্বে বিপন্ন কিন্তু চট্টগ্রাম অঞ্চলে এখনো আছে তেমন কয়েকটি পাখি হলো বন মোরগ, রাজধন, হরিয়াল, হুতোম পেঁচা, কাদা পাখি, ধুতিয়াল, রাজহাঁস, পানচিল।

পাখিগুলো চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো দেখতে পাওয়া যায়। তবে বন, জলাশয় রক্ষা না হলে এক সময় এসব পাখিও বিপন্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন এ পাখি বিশেষজ্ঞ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সংগীত পরিবেশন করেন ডা.ঋতুপর্ণা দে। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বই বিপনী ‘বাতিঘর’ এর স্বত্ত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ।

বাংলাদেশ সময়:১৬৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।