ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

প্রকল্পের ব্যয় ৫৭ কোটি, কাজ শুরুর আগেই খরচ ৪০ কোটি!

আবদুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৪
প্রকল্পের ব্যয় ৫৭ কোটি, কাজ শুরুর আগেই খরচ ৪০ কোটি! ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার বাকি আছে আর তিন মাস, অথচ এখনও কাজই শুরু হয়নি। আরও বিস্ময়কর হচ্ছে, কাজ শুরুর আগেই বরাদ্দের ৭০ শতাংশ টাকা তুলে খরচ করে ফেলেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

কাজ শুরুর আগেই, কোন খাতে, কিভাবে এত টাকা খরচ হল তার সুনির্দিষ্ট কোন হিসাবও নেই সিটি করপোরেশনের কাছে।

করপোরেশনের দাবি, জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনকে এ টাকা দেওয়া হয়েছে।
তবে কি পরিমাণ টাকা দেয়া হয়েছে তা জানে না জেলা প্রশাসন।

করপোরেশন সুত্রে জানা যায়, জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে বহদ্দারহাট মোড় থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত ‘মেরিনার্স বাইপাস সড়ক নির্মাণ’ এর উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। ২০১০ সালের ৭ ডিসেম্বর একনেক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭ কোটি ২৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার অর্থায়ন করবে ৪৫ কোটি ৭৯ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। সিটি করপোরেশনের নিজস্ব তহবিল থেকে ১১ কোটি ৪৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয় করার কথা রয়েছে। কাজ শেষ হওয়ার কথা ২০১৪ সালের জুন মাসে।

অথচ সিটি করপোরেশন এখনো প্রকল্পটির কাজই শুরু করতে পারেনি। ইতিমধ্যে প্রকল্প বরাদ্দের ৪০ কোটি টাকা ব্যয় করে ফেলেছে করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

এ প্রসঙ্গে মেয়র এম মনজুর আলম বাংলানিউজকে বলেন,‘নগরীর জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন খুবই জরুরী। প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। তারা ঠিক সময়ে জমি বুঝিয়ে না দেওয়ায় এখনো কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। ’

কাজ শুরুর আগে বরাদ্দের ৭০শতাংশ টাকা খরচ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন,‘জমি অধিগ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসনকে দু’ দফায় ৪০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। ’

এ প্রসঙ্গে  অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) রাব্বী মিয়া বাংলানিউজকে বলেন,‘জমি অধিগ্রহণের পুরো টাকা না পেলেতো জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব না। জমি অধিগ্রহণের কাজ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের জরিপ কর্মকর্তারা যৌথভাবে স্বাক্ষর করে আমাকে বুঝিয়ে দিলে আমি বিভাগীয় কমিশনারকে বুঝিয়ে দিব। বিভাগীয় কমিশনার করপোরেশনকে জমি বুঝিয়ে দিবেন। ’

করপোরেশনের কাছ থেকে কত টাকা বুঝে পেয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। করপোরেশনই ভালো বলতে পারবে। ’

করপোরেশন সুত্র জানায়, ২০১০ সালে ‘বহদ্দারহাট মোড় হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত মেরিনার্স বাইপাস সড়ক উন্নয়নসহ ডাইভারশন খাল ও সন্নিহিত খালসমূহের পুনর্বাসন’ শিরোনামে প্রকল্পটির কাজ শুরু করার কথা ছিল। প্রকল্পটি ৩৩১ দশমিক ৮ শতক জমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৫০ কোটি টাকা। ভবনের ক্ষতিপূরণের জন্য ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার টাকা। ৩ দশমিক ২৫২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, একটি সেতু ও দুটি কালভার্ট নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ কোটি সাত লাখ ৫৪ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।