ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দশমিক ২৫ শতাংশ সহায়তা পাচ্ছে গার্মেন্টস মালিকরা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৪
দশমিক ২৫ শতাংশ সহায়তা পাচ্ছে গার্মেন্টস মালিকরা বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনা ও রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনা পরবর্তী সংকট কাটিয়ে উঠতে সরকারের পক্ষ থেকে পোশাক শিল্প মালিকদের দশমিক ২৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

এছাড়া উৎসে কর দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক তিন শতাংশ এবং নতুন পণ্য ও বাজার তৈরির ক্ষেত্রে দুই শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তিন শতাংশ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এতে ব্যবসায়ীদের অন্তত ১১ শত কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
নগরীর এমএমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ামে তিনদিন ব্যাপী চিটাগাং অ্যাপারেল, ফেব্রিক্স এন্ড এক্সেসরিজ এক্সপজিশন(কাফেক্সপো) ২০১৪ উপলক্ষ্যে বিজিএমইএ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ইউরোপে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ প্রথম সারিতে রয়েছে। গত বছর বিরোধী দলের সহিংসতার পরও দেশের প্রধানতম রপ্তানিখাততে বাধাগ্রস্থ করতে পারেনি।

তাই এমন পরিস্থিতিতে যারা রপ্তানি সচল রেখেছে তাদের সহায়তা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।  

বর্তমানে ৩০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির মধ্যে ২২ বিলিয়নই পোশাক খাতের জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে কেবল পোশাক খাতেই রপ্তানি হবে ৩০ বিলিয়ন ডলার।

তাজরীন ফ্যাশন দুর্ঘটনা ও রানা প্লাজা ধ্বসের ঘটনায় পোশাক শিল্প খাতে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা কাটিয়ে উঠবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ২০২১ সালে পোশাক খাতে রপ্তানি হবে ৫০ বিলিয়ন ডলার।

চট্টগ্রামে গার্মেন্ট পল্লী হবে:
প্রধান নদী বন্দর চট্টগ্রামে হলেও এখানে মাত্র ৩০০ গার্মেন্টস কারখানা চালু থাকায় আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে ৩০০ পোশাক কারখানা চালু রয়েছে। এ সংখ্যা খুবই কম। কারণ প্রধান সমুদ্র বন্দর এখানে। দেশের অন্যান্য স্থানে কারখানা স্থাপন করলেও আমদানি-রপ্তানি করতে হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। তাই এখানেই সবচেয়ে বেশি কারখানা হওয়ার কথা ছিল।

ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়ে মন্ত্রী বলেন,‘আজ এখান থেকে যাওয়ার পরই আমি চট্টগ্রামে গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তোলার কাজ শুরু করবো। ‘

গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তুলতে কম সুদে চীন বাংলাদেশকে ঋণ দেবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তোলা ছাড়া কোন বিকল্প নাই। কারণ শেয়ারড বিল্ডিং আইডিয়া থেকে আমাদের সরে আসতে হবে।

ইউরোপ, এমেরিকা নির্ভর না হয়ে অন্যান্য দেশে রপ্তানি বাড়ানোর দিকে জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা কয়েটা বাজারে সিমাবদ্ধ থাকতে চাই না। চীন, জাপান, ভারতসহ কয়েকটি দেশ শূল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিচ্ছে।

অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে এগিয়ে আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান একটি অকার্যকর রাষ্ট্র। তারা আমাদের উত্থান দেখে ইর্ষান্বিত।

বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা কারো চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত মেনে নেব না।

জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ইউরোপ এমেরিকা আরো উদার হবে বলে মনে করছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আশা করি আমরা জিএসপি সুবিধা ফিরে পাব।

পোশাক শিল্পখাত ক্রান্তিকাল অতিক্রম করলেও এ সংকট থেকে মুক্তি মিলবে বলে আশা করেন ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তিনি।

নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, সৎ সাহস নিয়ে এগিয়ে গেলে পোশাক শিল্প মালিকরা এ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবেন।

তিনি বলেন, অতীতেও এমন অনেক সংকটময় মুহূর্ত এসেছিল। সৎ সাহস নিয়ে আপনারা এগিয়ে ‍গেলে সফল হবেন। আমরা আপনাদের উপর নির্ভর করছি।

গার্মেন্টস পল্লী গড়ে তোলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি ‍অনেক খাস জমি আছে। কিস্তির মাধ্যমে এসব জমি ব্যবসায়ীদের লীজ দেওয়া যায়।

বিজিএমইএ সভাপতি আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধীন অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি নাছির আহমেদ চৌধুরী, মেলার কো-অর্ডিনেটর এসএম আবু তৈয়ব বক্তব্য রাখেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।