চট্টগ্রাম: আইন কলেজের শিক্ষার্থী আফসার হোসেন শামীমকে খুনের দায়ে ইদ্রিস আলম বাবুল নামে তার এক বন্ধুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানাও করেছেন।
এছাড়া আদালত তিন আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। এরা হল, আলী আজম প্রকাশ খসরু, মনির হোসেন এবং আব্দুর রউফ প্রকাশ ভুট্টু।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক রেজা তারিক আহমেদ এ রায় দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট আইয়ূব খান বাংলানিউজকে বলেন, ইদ্রিস আলম বাবুল মূল খুনী। তার বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারায় আদালত তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম আইন কলেজের ছাত্র আফসার হোসেন শামীম ২০১২ সালের ২০ জুলাই নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি এলাকার বক্সনগরে নিজ বাসা থেকে বন্ধু ইদ্রিস আলমের বাসায় যাবার কথা বলে মোটর সাইকেল নিয়ে বের হন। এরপর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা। শামীমের পরিবারের লোকজন ইদ্রিস আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করে। খসরু, মনির ও ভুট্টু এক লক্ষ টাকা দিলে শামীমকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে তার পরিবারকে জানায়।
নিখোঁজের দু’দিন পর ২২ জুলাই রাউজান উপজেলার বদুপাড়া এলাকা থেকে শামীমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ বাদল রায় বাদি হয়ে রাউজান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর শামীমের বন্ধুদের মোবাইল ট্র্যাকিং করে পুলিশ খসরু, মনির ও ভুট্টুকে গ্রেপ্তার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ ইদ্রিস আলম বাবুলকেও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। এছাড়া বাবুলের কাছ থেকে শামীমের মোবাইল এবং পটিয়ায় তার খালার বাসা থেকে শামীমের মোটর সাইকেল উদ্ধার করতেও সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর বাবুল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে জানায়, অর্থনৈতিক বিষয়ে নিজেদের মধ্যে বিরোধকে কেন্দ্র করে শামীমকে নগরীর বাকলিয়ায় বাবুলের বাসায় দাওয়াতের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করে লাশ ফেলে আসা হয় রাউজানে।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় চারজনকে অভিযুক্ত করে ২০১২ সালের ২৭ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মোট ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালত রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় হাজতে থাকা চার আসামীকে আদালতে হাজির করা হয়। মর্মান্তিক খুনের শিকার শামীম নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার মোজাম্মেল আহমদের ছেলে। মোজাম্মেল পেশায় হাইকোর্টের মুহুরি বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ঘণ্টা, মার্চ ১৩,২০১৪