চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী লেইন এলাকা থেকে নিখোঁজের তিনদিন পর স্বর্ণের অলংকার প্রস্তুতকারক (স্বর্ণকার) বাপ্পা ধরের (২৩) হদিস মিলেছে।
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে তাকে অজ্ঞান অবস্থায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং এলাকায় ইনানি রেস্টুরেন্টের অদূরে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে পাহাড়ী এলাকায় পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় দায়ের হওয়া জিডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার এস আই মুহিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বাপ্পা’র দুলাভাই আমাদের জানিয়েছেন তাকে পাওয়া গেছে। বাপ্পা এখন চকরিয়া তার আত্মীয়স্বজনের হেফাজতে আছে।
বাপ্পা ধরের দুলাভাই আশীষ ধর বাংলানিউজকে জানান, সন্ধ্যার দিকে বাপ্পাকে প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় স্থানীয় লোকজন দেখতে পায়। স্থানীয়দের প্রাথমিক সেবার পর বাপ্পার জ্ঞান ফিরলে তিনি তার বাবার মোবাইল নম্বর তাদের দেন।
এরপর বাপ্পার বাবা বাদল ধরের সঙ্গে তারা যোগাযোগ করেন। চকরিয়ায় বাপ্পার কয়েকজন আত্মীয়কে দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তারা বাপ্পাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
এদিকে বাপ্পাকে চট্টগ্রামে ফিরিয়ে আনতে তার বাবা ও দুলাভাইসহ কয়েকজন চকরিয়ায় যাচ্ছেন। বাপ্পাকে চট্টগ্রামে এনে ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে বলে জানান আশীষ ধর।
এছাড়া বাপ্পা’র কাছে প্রায় সাড়ে ৬ ভরি স্বর্ণালংকার ছিল বলেও জানান আশীষ। উদ্ধারের সময় তার কাছে অলংকারগুলো পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।
বাপ্পা নগরীর হাজারী লেইনের মিঞা শপিং মার্কেটের দোতলায় জনৈক প্রবীর ধরের স্বর্ণের কারখানায় কাজ করেন। গত শুক্রবার (৭ মার্চ) সকাল ১০টায় অর্ডারের কিছু স্বর্ণালংকার নিয়ে পটিয়া যাবার উদ্দেশ্যে বের হন বাপ্পা। এরপর তার আর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলনা।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে বাপ্পার বাবা বাদল ধর বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি জিডি করেন।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর হাজারী লেইনে নিজ বাসার সামনে থেকে র্যাবের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচিত ধনাঢ্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃদুল চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় তাদের এক আত্মীয় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা নিজেদের র্যাব ও ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করে।
গত ১৫ জানুয়ারি র্যাবের কর্মকর্তা মেজর রাকিবুল আমিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৮০ ভরি স্বর্ণ লুটের একটি মামলা দায়ের করেন মৃদুল চৌধুরী। এ ঘটনার জের ধরে র্যাব তাকে অপহরণ করেছে বলে সন্দেহ করেন মৃদুলের স্ত্রী ও ভাই।
এরপর গণমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে মৃদুল চৌধুরীকে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার কংসনগর বাজারের পাশে ধানক্ষেতে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। সেখান থেকে উদ্ধার হওয়ার পর ১৯ জানুয়ারি তিনি আদালতে সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
এরপর গত ১ মার্চ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মৃদুল চৌধুরীকে অপহরণের সঙ্গে র্যাব কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য কোন সদস্য জড়িত আছে কিনা তা অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ঘণ্টা, মার্চ ০৯,২০১৪