ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রমা চৌধুরী শুধুই কাঁদলেন, বলতে পারেননি কিছুই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৪
রমা চৌধুরী শুধুই কাঁদলেন, বলতে পারেননি কিছুই ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: আবেগে, কান্নায় নারী হিসেবে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারেননি একাত্তরের জননী খ্যাত রমা চৌধুরী।

নারী দিবসে একাত্তরে সন্তান হারানো এ বীরাঙ্গণাসহ পাঁচ কৃতী নারীকে সম্মাননা দেয় দৃষ্টি, চট্টগ্রাম।

সম্মাননা হাতে নিয়ে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন রমা চৌধুরী। অনুভূতি জানানোর আগে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।


নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউটে শনিবার সকালে দৃষ্টি’র এ আয়োজনে সম্মাননা জানানোর পাশাপাশি ছিল কথামালা, গান ও নাচ। মাসুদ বকুলের পরিকল্পনায় এ আয়োজনের সঞ্চালনায় ছিলেন আদনান মান্নান। আয়োজনের শুরুতে মিলি চৌধুরী আবৃত্তি করেন ‘আমি সেই মেয়ে’ শিরোনামের কবিতাটি।

এরপর বড় পর্দায় ভেসে উঠে সেই সব নারীদের ছবিসহ জীবনী যাদের হাত ধরে কালের পরিক্রমায় বর্তমানে এসে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ‘যারা ভোর এনেছিল’ শিরোনামের এ প্রামান্য চিত্র প্রদর্শনী শেষে সম্মাননা তুলে দেয়া হয় মুক্তিযুদ্ধে সন্তানহারা জননী রমা চৌধুরীর হাতে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শীলা মোমেন সম্মননা রমা চৌধুরীর হাতে তুলে দেন।

এসময় শীলা মোমেন বলেন, ‘এখনও সময় আছে, আসুন আমরা সকলে মিলে এ মায়েদের কান্না থামাই। ঘাতকদের তাড়িয়ে দিই এদেশ থেকে। ’

এরপর একে একে সম্মাননা তুলে দেয়া হয় নারীদের হাতে। সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ডেইজি মউদুদের হাতে সম্মাননা পদক তুলে দেন নারী উদ্যোক্তা কোহিনূর কামাল। এরপর রত্নগর্ভা অধ্যাপিকা সাহেদা বানুর হাতে সম্মাননা তুলে দেন চিকিৎসক বাসনা মুহুরী। ক্রীড়াক্ষেত্রে অবদানের জন্য বিলকিস রাশেদের হাতে উঠে সম্মাননা। তুলে দেন নৃত্যশিল্পী শারমিন হেসেন। শিক্ষক কামরুন নাহারের হাতে পদক তুলে দেন অধ্যাপিকা হাসিনা জাকারিয়া।

নারীদের নিয়ে কাজ করে যাওয়া প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম লেডিস ক্লাব ও মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, চট্টগ্রামের হাতে সম্মাননা তুলে দেন বিজ্ঞানী ড. জয়নাব বেগম ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপিকা আনোয়ারা আলম।

সংগীত পরিবেশন করেন শ্রেয়সী রায়, নৃত্য পরিবেশন করেন শুভ্রা সেন গুপ্ত ও তার দল, পাঠ অভিনয় করেন শুভ্রা বিশ্বাস এবং, বৃন্দ আবৃত্তিতে অংশ নেন বোধনের শিল্পীরা।  

উল্লেখ্য ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর রমা চৌধুরীকে নিয়ে বাংলানিউজ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। একাত্তরে সব হারিয়ে বইয়ের ফেরিওয়ালা শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশের পর বিভিন্ন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রমা চৌধুরীকে নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ২৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রমা চৌধুরীকে গণভবনে ডেকে নিয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীকে রমা চৌধুরী নিজের জীবনের কষ্টের কাহিনী খুলে বলেন।

এদিকে বিভিন্ন সংগঠন রমা চৌধুরীকে আর্থিক সহযোগিতার আগ্রহ দেখালেও রমা চৌধুরী তা নিতে অস্বীকৃতি ‍জানান।

একাত্তরে দু’সন্তান হারানো রমা চৌধুরী এখনও চট্টগ্রাম শহরের রাস্তায় ফেরি করে নিজের লেখা বই বিক্রি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৮ঘণ্টা, মার্চ ০৮,২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।