চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী লেইন এলাকায় বাপ্পা ধর (২৩) নামে এক স্বর্ণের অলংকার প্রস্তুতকারক (স্বর্ণকার) নিখোঁজ হয়েছেন। গত শুক্রবার থেকে তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছেনা।
দু’দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিয়ে তার কোন সন্ধান না পেয়ে শনিবার দুপুরে তার বাবা বাদল ধর নগরীর কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কোতয়ালী থানার এস আই মুহিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার থেকে বাপ্পা ধরের মোবাইল বন্ধ আছে।
বাদল ধর বাংলানিউজকে জানান, তার ছেলে বাপ্পা হাজারী লেইনের মিঞা শপিং মার্কেটের দোতলায় জনৈক প্রবীর ধরের স্বর্ণের কারখানায় কাজ করেন। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে বাপ্পা তার মাকে ফোন করে জানান, তিনি কিছু অলংকার নিয়ে পটিয়ায় এক ব্যবসায়ীর কাছে যাচ্ছেন। ওই ব্যবসায়ীর অর্ডারমত অলংকারগুলো বানানো হয়েছে।
পটিয়া থেকে বাপ্পা চন্দনাইশের দোহাজারির জামিরজুড়ি গ্রামে যাবেন বলেও মাকে জানিয়েছেন।
বাদল ধর জানান, সকাল ১১টার দিকে পটিয়ায় রওনা দিয়েও মাকে একবার ফোন করেছিলেন বাপ্পা। এরপর দুপুর ২টার দিকে পটিয়া থেকে ওই ব্যবসায়ী বাদল নাথের কাছে ফোন করে বাপ্পার খবর জানতে চান। এসময় বাপ্পার মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়।
বাদল ধর বাংলানিউজকে বলেন, আমরা মোবাইলে যোগাযোগের জন্য বারবার চেষ্টা করেছি। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সবার কাছে খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু কোথাও বাপ্পার সন্ধান পাইনি। স্বর্ণের অলংকার নিয়ে যাচ্ছিল বলে আমাদের বেশি দুশ্চিন্তা হচ্ছে।
এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর হাজারী লেইনে নিজ বাসার সামনে থেকে র্যাবের বিরুদ্ধে মামলা করে আলোচিত ধনাঢ্য স্বর্ণ ব্যবসায়ী মৃদুল চৌধুরীকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এসময় তাদের এক আত্মীয় বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা নিজেদের র্যাব ও ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করে।
গত ১৫ জানুয়ারি র্যাবের কর্মকর্তা মেজর রাকিবুল আমিনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৮০ ভরি স্বর্ণ লুটের একটি মামলা দায়ের করেন মৃদুল চৌধুরী। এ ঘটনার জের ধরে র্যাব তাকে অপহরণ করেছে বলে সন্দেহ করেন মৃদুলের স্ত্রী ও ভাই।
এরপর গণমাধ্যমে এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোরে মৃদুল চৌধুরীকে কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার কংসনগর বাজারের পাশে ধানক্ষেতে ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। সেখান থেকে উদ্ধার হওয়ার পর ১৯ জানুয়ারি তিনি আদালতে সাক্ষী হিসেবে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
এরপর গত ১ মার্চ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে মৃদুল চৌধুরীকে অপহরণের সঙ্গে র্যাব কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্য কোন সদস্য জড়িত আছে কিনা তা অনুসন্ধানে একটি কমিটি গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ঘণ্টা, মার্চ ০৮,২০১৪