চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে কাভার্ড ভ্যান ঢুকিয়ে আমদানি কিংবা রপ্তানির জন্য রাখা পণ্য চুরি করে বাইরে নিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র।
চট্টগ্রাম বন্দরকেন্দ্রিক ১০-১৫টি সংঘবদ্ধ চক্র এ চুরিতে সক্রিয় আছে।
মঙ্গলবার গভীর রাতে নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকা থেকে লিটন দাশ (৩৬) নামে সংঘবদ্ধ কাভার্ড ভ্যান চোরচক্রের এক দলনেতাকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো.কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, কাভার্ড ভ্যান চোর চক্রের সদস্যদের একটি তালিকা আমরা করেছি। এ তালিকা অনুযায়ী ইতোমধ্যে আমরা ৪-৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছি। তবে প্রথমবারের মতো একটি চক্রের প্রধান লিটনকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কাভার্ড ভ্যান চোরের আরও কয়েকটি চক্রের সর্দার হিসেবে নগরীতে আবু ওরফে এলাইচ ওরফে কিং আবু, নাছির ওরফে গুলি নাছির, লেদু মাঝি, পিচ্চি মাসুদ এবং লোহা জসীম সক্রিয় আছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। প্রত্যকে গ্রুপে ৮-১০ জন সদস্য এ চুরির সঙ্গে জড়িত বলে সূত্র জানিয়েছে।
সহকারী কমিশনার মো.কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চোরচক্রের সদস্যদের সঙ্গে বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশ আছে। রাতের বেলায় তাদের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কাভার্ড ভ্যানের বাইরের গাড়ি বন্দরের জেটি এবং কনটেইনার ইয়ার্ডের ভেতরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রপ্তানি কিংবা আমদানির জন্য রাখা পণ্য থেকে চুরি করে কাভার্ড ভ্যানে তুলে আবারও বাইরে চলে আসে।
এক্ষেত্রে বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও সিএণ্ডএফ এজেন্টরাও জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
কামরুজ্জামান জানান, আটক হওয়া লিটন তার সঙ্গে থাকা চোরচক্রের কয়েকজনের নাম বলেছে। চুরির কৌশলও বিস্তারিতভাবে জানিয়েছে।
লিটনের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের আহলা গ্রামে। বর্তমানে নগরীর ঘাটফরহাদবেগ এলাকার আজিজ বিড়ি কোম্পানির পাশে তার বাসা। প্রায় ১০ বছর আগে লিটন নগরীর হাজারী লেইনে বসবাস করতেন। তার বিরুদ্ধে কাভার্ড ভ্যান চুরির অভিযোগে বন্দর থানায় দু’টি মামলা আছে বলে কামরুজ্জামান জানান।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেয়ার সময় লিটন দাশ বাংলানিউজকে জানায়, একসময় লিটন কাভার্ড ভ্যানের কোম্পানিতে চাকুরি করত। সেখান থেকে এক পর্যায়ে সে চুরির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়ে। তার বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও এসব মামলায় লিটন জামিনে আছে বলে সে জানিয়েছে।
সহকারী কমিশনার কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বন্দরে রপ্তানি পণ্য নিয়ে রাখার পর সেগুলো থেকে পণ্য সরিয়ে নেয় চোরচক্র। বিদেশে রপ্তানির পর কম পণ্য পেয়ে বাংলাদেশী রপ্তানিকারকের প্রতি নেতিবাচক ধারণার সৃষ্টি হয় ক্রেতার। এতে রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন হচ্ছে। বিশেষ করে গার্মেণ্টস মালিকরা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ঘণ্টা, মার্চ ০৫,২০১৪